ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ফাহিম (১০) নামের এক মাদরাসা ছাত্রকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ফাহিম নগরীর তালতলা এলাকার মো. বিল্লাল হোসেনের ছেলে এবং জামিয়া আরাবিয়া মাখজানুল উলুম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ।
বর্তমানে শিশুটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শিশুটিকে অজ্ঞাত পরিচয়ে হাসপাতালে ৩০নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কেওয়াটখালি আবাসন পল্লীর বাসিন্দা ফজিলা বেগম নদীতে গোসল করতে গেলে শিশু ফাহিমকে নদী দিয়ে ভেসে যেতে দেখে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়। এ সময় শিশুটি কোনো কথা বলতে না পারায় এবং সে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তার জ্ঞান ফিরলেও কোনো কথা বলতে পারছিল না শিশুটি। পরে চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসায় কিভাবে নদীতে পড়লো তা না জানালেও কাগজে লিখে নিজের নাম ঠিকানা ও অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার প্রদান করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের খবর দিলে তারা এসে শিশুটিকে শনাক্ত করে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩০নং ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. শাহজাহান মিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে শিশুটি সুস্থ আছে। তবে যেহেতু শিশুটিকে নদী থেকে ডুবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে, সে জন্য কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা করে চিকিৎসা প্রদান করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিমাত্রায় ভয় পেয়ে শিশুটি কথা বলছে না, তবে লিখিতভাবে সে তার পরিচয় দিয়েছে।
শিশুটিকে উদ্ধার করা ফজিলা বেগম জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নদীতে গোসল করতে গিয়ে কান্নার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি পাঞ্জাবি পরা একটি ছেলে ভেসে যাচ্ছিল। এ সময় ছেলেটির হাত এবং মাথার কিছু অংশ ভেসে ছিল। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ছেলেটিকে নদী থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যায়। ছেলেটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করি।
শিশুটির বাবা বিল্লাল হোসেন জানান, ফাহিম মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র ছিল। সন্ধ্যার দিকে মাদ্রাসা থেকে জানানো হয় তার ছেলে ফাহিমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় ফাহিমের খোঁজ করা হয়। রাত ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় ফাহিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখানে এসে আমার ছেলে ফাহিমকে খুঁজে পাই।
তিনি আরও জানান, তার ছেলে ফাহিম সাতার জানতো না। কিভাবে ফাহিম মাদ্রাসা থেকে বের হলো এবং নদীতে পড়লো এটি বুঝতে পারছি না।
হাসপাতালের ডা, মো. শাহজাহান মিয়া আরও জানান, শিশুটি যেহেতু অজ্ঞাত হিসেবে ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে সে ক্ষেত্রে তার কোনো শারিরিক জটিলতা না থাকলে হাসপাতালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সকল আইনি প্রক্রিয়া মেনে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এএল/