• ঢাকা রবিবার
    ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১

হাতুড়েচিকিৎসায় গবাদিপশুর মৃত্যু

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২২, ০৭:০১ এএম

হাতুড়েচিকিৎসায় গবাদিপশুর মৃত্যু

সুদীপ্ত শামীম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হাতুড়ে পশু চিকিৎসক জহুরুল হকের অপচিকিৎসায় একটি উন্নত জাতের গাভীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামে এঘটনা ঘটে।


হাতুড়ে পশু চিকিৎসক জহুরুল হক উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের মৃত শহিদার রহমান পচার ছেলে।


সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে হাতুড়ে পশু চিকিৎসক জহুরুল হকের অপচিকিৎসায় একই মৃত আনোয়ার মিয়ার ছেলে খামারি উদ্যোক্তা মো. আবুল কালামের উন্নত জাতের ফ্রিজিয়ান গাভী মারা যায়। এতে তার প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।


জানা যায়, খামারি উদ্যোক্তা মো. আবুল কালাম অনেক আগে থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই তিনি একটি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী দিয়ে খামার শুরু করেন। কিন্তু কোন প্রশিক্ষণ না থাকা হাতুড়ে পশু চিকিৎসক জহুরুল হকের অপচিকিৎসায় স্বপ্ন ভেস্তে যায় আবুল কালামের।


শনিবার (৬ আগস্ট) হঠাৎ করে খামারি আবুল কালামের গাভীটি এলার্জি জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তিনি স্থানীয় পশু চিকিৎসক জহুরুল হকের শরণাপন্ন হয়। হাতুড়ে পশু চিকিৎসক খামারি কালামের বাড়িতে এসে গাভীটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করেই কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন পুশ করে চলে যান। পরদিন রবিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে আবারও ২টি অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন পুশ করেন। এতেও গাভীটি সুস্থ না হওয়ায় সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন পুশ করার ৩০ মিনিট পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাভীটি মারা যায়।


স্থানীয়রা জানায়, মাধ্যমিকের গণ্ডি না পেরেই জহুরুল হক চিকিৎসক বনে যা। তার কোন প্রকার সনদ নেই। এছাড়াও গবাদিপশুর প্রাথমিক চিকিৎসার কোন প্রশিক্ষণ নেই। ইতোপূর্বেও তার অপচিকিৎসায় অনেক গবাদিপশু মারা গেছে। তার অপচিকিৎসার ফলে অনেক খামারি পুঁজি হারিয়ে ফেলেছে।


উদ্যোক্তা কালাম মিয়া বলেন, 'উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে একটি গাভী পালন দিয়ে খামার শুরু করি। সব সময় সেই গাভীকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। ভাবছিলাম একদিন বড় খামারি হবো, কিন্তু সে স্বপ্ন ভেঙে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। সব শেষ করে দিল এই হাতুড়ে চিকিৎসক।'


অভিযুক্ত হাতুড়ে পশু চিকিৎসক জহুরুল হক দাম্ভিকতার সুরে বলেন, '২৮ বছর থেকে গবাদিপশুর চিকিৎসা করে আসছি। চিকিৎসা করতে গেলে দু'একটি গবাদিপশু মরতেই পারে। আমি সঠিক চিকিৎসাই দিয়েছি।'


এবিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. ফজলুল করিম সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, 'খামারি আবুল কালামের গবাদিপশু মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়ে সেখানে একটি টিম পাঠিয়েছিলাম। তারা সব দেখে এসেছে। এবিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেই হাতুড়ে পশু চিকিৎসক জহুরুল হকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'


এইচএ

 



দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ