• ঢাকা রবিবার
    ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১

পুরোহিত ছাড়াই চলছে মন্দির, শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে পালিত হয় আচার অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২২, ০৬:২৯ এএম

পুরোহিত ছাড়াই চলছে মন্দির, শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে পালিত হয় আচার অনুষ্ঠান

বশেমুরপ্রবি প্রতিনিধি

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে পুরোহিত ব্যতিত পালিত হচ্ছে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান; পুরোহিত নিয়োগে দরখাস্ত প্রদান করার দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও নিশ্চুপ প্রশাসন।


অনুসন্ধানে দেখা যায়, মন্দিরে পুরোহিত নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মন্দিরের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শেখর সরকার কতৃর্ক স্বাক্ষরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি দরখাস্ত প্রদান করা হয়। কিন্তু চলতি বছরে দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত মন্দিরে কোনো পুরোহিত নিয়োগ দেওয়া হয়নি।


এদিকে, ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য, খায়রুল আলম, মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন বলে জানা যায়, কিন্তু অদ্যাবধি প্রশাসনের অবহেলতার কারণে অবহেলিত আছে মন্দিরটি। এমনকি প্রতিবছর মন্দিরে যে পরিমাণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয়, সে পরিমাণ বাজেটও প্রশাসন থেকে পাওয়া যায় না বলে জানান তারা।


সরিজমিনে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় মন্দিরে কোনো পুরোহিত নেই, কিন্তু তা সত্ত্বেও সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন, এমনকি যথারীতি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান এবং বাৎসরিক কিছু অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। তবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করার জন্য পুরোহিত ব্যতিত তারা নানান ধরনের সমস্যায় ভুগছেন।


এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মন্দিরে একাধিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হলেও সেগুলো পুরোহিত ব্যতিতই হচ্ছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে গেলে পুরোহিত প্রয়োজন। পুরোহিত ব্যতিত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বিঘ্ন ঘটে। তারা বলেন, সনাতন ধর্মানুযায়ী নিয়মিত সকাল সন্ধ্যা পূজা করতে হয় পুরোহিত না থাকার কারণে মন্দিরে নিয়মিত পূজা করা হচ্ছে না এবং সনাতন রীতি অনুযায়ী সেগুলো হলো পাপ।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্দিরের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শেখর সরকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মন্দিরে একজন পুরোহিত থাকাটা স্বাভাবিক বিষয়, কারণ মন্দিরটি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত তাই পুরোহিত নিয়োগ দেওয়াটাও প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পরে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মন্দিরের অবস্থান ৯ বছর অতিবাহিত হলেও প্রশাসন থেকে মন্দিরের দিকে তেমন কোনো সুনজর পরেনি। তিনি আরও বলেন, মন্দিরে পুরোহিত নিয়োগের জন্য প্রশাসন বরাবর আমরা একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছি, এমনকি দরখাস্তও প্রদান করেছি কিন্তু প্রশাসন থেকে আশ্বাস ব্যতিত কোনো ফলাফল পাইনি। 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউকে নিয়োগ প্রদান করতে হলে তাকে ইউজিসি কর্তৃক পোস্টকৃত হতে হবে। কারণ ইউজিসি কাউকে নিয়োগ না দিলে আমার একার পক্ষে কাউকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্দিরে পুরোহিত নিয়োগ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি আছে এবং পুরোহিত নিয়োগ দিতে হলে আমাকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে হবে যে তাদের মন্দিরে পুরোহিত আছে কিনা৷ এবং পুরোহিত নিয়োগ দিতে হলে পুরোহিত নিয়োগের জন্য পোস্ট আছে কিনা সেটিও দেখতে হবে। যদি পোস্ট থাকে তাহলে ইউজিসি বরাবর দরখাস্ত করলে পুরোহিত নিয়োগ করা যাবে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ৯ বছরের ইতিহাসে কেন্দ্রীয়ভাবে মসজিদে মোয়াজ্জিন নিয়োগ পেলেও মন্দিরে কেন পুরোহিত নিয়োগ পায়নি, এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্দিরে পুরোহিত নিয়োগের জন্য পোস্ট আছে কিনা সেটি আমার জানা নেই, তবে রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি দেখার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।


এ বিষয়ে জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


এইচএ /এএল





দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ