• ঢাকা রবিবার
    ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২২, ০১:৫৪ এএম

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের আইজিএ প্রকল্পের ফ্যাশন ডিজাইন ট্রেডের প্রশিক্ষক মো. রায়হানুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক নারী প্রশিক্ষণার্থীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও বদলির জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার তরফ থেকে প্রকল্প পরিচালক বরাবর চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। 

জানা যায়, রায়হানুল ইসলামের বিরুদ্ধে ফ্যাশন ডিজাইন ট্রেড কোর্সের নারী প্রশিক্ষণার্থীদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা ও দাফতরিক নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। একাধিক নারী প্রশিক্ষণার্থীর অভিযোগে জানা যায়, তিনি প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পরেও নারী প্রশিক্ষণার্থীদের ক্লাসে বসে থাকতে বাধ্য করেন এবং নারী প্রশিক্ষণার্থীদের কাটিং শেখানোর নামে শরীরের মাপ নিতে গিয়ে ইচ্ছাকৃত খারাপভাবে শরীর স্পর্শ করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি উক্ত অফিসে কর্মরত অফিস সহায়ক আব্দুল খবির বাবলুর হাজিরা প্রত্যয়ন পরিবর্তন করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহারের স্বাক্ষর জাল করে প্রত্যয়ন প্রদান করেন। এ ছাড়া উক্ত রায়হানুলের বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণার্থী নিয়োগের নামে টাকা নেওয়ার সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিক ও জনগণ এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণার্থীদের অভিযোগে জানা যায়, প্রত্যেক ব্যাচে প্রশিক্ষণার্থী নিয়োগকালীন সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ কমিটির সকল সদস্যের উপস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা এবং সাক্ষাতকার গ্রহণ করে প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন করা হলেও উক্ত রায়হানুল প্রশিক্ষণার্থীদের বিভ্রান্ত করে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে পুরাতন প্রশিক্ষণার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে তাদের নাম পরিবর্তন করে পুনরায় প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে রায়হানুলকে দাফতরিকভাবে একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে এবং তাকে সতর্ক করা হলেও তিনি তা আমলে না নিয়ে আগের মতোই তার অসদাচরণ চালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। সর্বশেষ গত ৩ জুলাই উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহার অভিযুক্ত রায়হানুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেন। যার স্মারক নং- উমবিককা/কিশোর/নীল/২০২২/২৮৬। তারিখ- ০৩/০৭/২০২২ খ্রিঃ।
ওই নোটিসে উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি এলাকার মোছা. শারমীন আক্তারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত রায়হানুলকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাও নোটিসের জবাব দাখিল করতে বলা হয়। পরবর্তীতে তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহার মহিলা বিষয়ক অধিদফতর, ঢাকায় ‘উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্প’র প্রকল্প পরিচালক বরাবর গত ৬ জুলাই ট্রেড প্রশিক্ষক মো. রায়হানুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ও বদলি বিষয়ে চিঠি পাঠান। যার স্মারক নং- উমবিককা/কিশোর/নীল/২০২২/২৯৭। তারিখ- ০৬/০৭/২০২২ খ্রিঃ।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছাম্মৎ সাবিকুন্নাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ট্রেড প্রশিক্ষক মো. রায়হানুল ইসলামের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও বদলির বিষয়ে জানিয়েছি। আদেশ পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেবো।’

অভিযোগের বিষয়ে ট্রেড প্রশিক্ষক মো. রায়হানুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি এক প্রশিক্ষণার্থীর স্থলে বোরখা পরে অন্য প্রশিক্ষণার্থীর ক্লাসে অংশগ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে এক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা রায়হানুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

এসএ/

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ