এক হাতে কাঁচি অন্য হাতে চিরুনি দিয়ে চুল ও দাড়ি কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নাটোরের নাপিত বা নরসুন্দররা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সেলুনগুলোতে চলছে চুল ও দাড়ি কাটানোর কর্মব্যস্ততা। 'দাদা আর কতজন, আমার সিরিয়াল কখন' সেলুনের নরসুন্দরের কাছে এমন প্রশ্ন করে চলেছে চুল ও দাড়ি কাটাতে আসা মানুষজন।
কেউ চুল কাটাতে সিরিয়াল দিয়ে বসে রয়েছেন, আবার কেউ সিরিয়াল দিয়ে হাতের টুকিটাকি কাজগুলো সারছেন। নরসুন্দরদের হাতের কাঁচির শব্দে মুখর আশপাশ। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় ঈদের দু-একদিন আগ থেকে সেলুনগুলোতে কাজের চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এতে সব বয়সী মানুষের চাপ সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে সেলুনের নরসুন্দরদের। যেন দম ফেলার সময়টুকুও নেই তাদের।
শনিবার (৯ জুলাই) নাটোর শহরের হরিশপুর, নিচাবাজার, স্টেশন বাজার, মাদরাসা মোড়, তেবাড়িয়া হাট, হাফরাস্তা, কলেজ মোড়, বড়গাছা এলাকার বিভিন্ন সেলুন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সেলুনগুলোতে মানুষের চাহিদা মতো বিভিন্ন স্টাইলে চুল ও দাড়ি কাটছেন নরসুন্দররা। তবে সেলুনে চুল কাটায় কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। কাঁচি দিয়ে চুল ও দাড়ি ছাঁটালেও বর্তমানে মেশিনের মাধ্যমে কাটছেন তারা। মেশিনের সাহায্যে চুল ও দাড়ি কাটতে সময় কম লাগায় চাহিদা বেড়েছে বলে জানান নরসুন্দররা।
অন্য সময়ের তুলনায় চুল ও দাড়ি কাটতে ঈদ বোনাস হিসেবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি নিচ্ছেন নরসুন্দররা। জনপ্রতি চুল কাটাতে ৫০ টাকা ও দাড়ি ছাঁটাতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা নিচ্ছেন।
চুল কাটাতে আসা কলেজ ছাত্র শাওন হোসেন বলেন, ’দুই ঘণ্টা আগে সিরিয়াল দিয়ে বসে রয়েছি। আমার আগে আরও ৫ জন সিরিয়ালে রয়েছে। তাদের চুল ও দাড়ি কাটানো হলে আমার সিরিয়াল। একজনের চুল ও দাড়ি কাটতে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট সময় লাগছে।’
অটোরিকশাচালক গফুর উদ্দিন বলেন, ’ঈদের আগে কয়েক দিন সেলুনে প্রচুর ভিড় বাড়ে। তবে দুপুরের পর ভিড় কিছুটা কম থাকে, তাই এ সময়ে এসেছি। এসে দেখি তবুও ৩ জন সিরিয়ালে আছেন। তাই সিরিয়াল দিয়ে বসে চা খাচ্ছি।’
চুল কাটাতে আসা কলেজ শিক্ষক কামরুল ইসলাম বলেন, ’ঈদ এলে কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তাই সুযোগ করে চুল কাটাতে এসেছি। সিরিয়াল দিয়ে বসে বসে পত্রিকা পড়ছি। জানি না কখন সিরিয়াল আসবে। তবে বিকাল হতে পারে আমার সিরিয়াল আসতে, যে পরিমানে সিরিয়াল রয়েছে মানুষের।’
নরসুন্দর বিজয় দাস বলেন, ’গত সাপ্তাহে সেলুনে তেমন ভিড় ছিল না। গত দু'দিন ধরে কাজের চাপ বেড়েছে। এখন থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত কাজের চাপ থাকবে। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ জনের চুল ও দাড়ি কাটার কাজ করছি। ঈদ হিসেবে চুল ও দাড়ি ছাঁটিয়ে ১০০ টাকা নিচ্ছি।’
স্টেশন বাজার এলাকার নরসুন্দর কমল রায় বলেন, ’ঈদের মধ্যে কাজের চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এজন্য দোকানে অতিরিক্ত লোক নিতে হয়। এ সময়ে এক সপ্তাহ কাজের চাপ থাকে। দিনে-রাতে সব সময় মানুষের ভিড় থাকে। সিরিয়াল দিতে গিয়ে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়।’
জেইউ