
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২২, ০৯:২৭ এএম
মাহফুজ রহমান, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটে আক্কেলপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমানকে প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দুপুরে ১টার দিকে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবারে সিরাজগঞ্জ জেলা জজ কোর্ট থেকে অস্থায়ীভাবে জামিন পেয়েছে বলে জানা ওই মামলার বাদীর আইনজীবি এ.কে.এম. হাসান ফারুক রুমি। ওই দিনে সন্ধ্যায় তাড়াশ থানায় জামিনের কপি জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পরির্দশক (তদন্ত) নুরে আলম।
মামলা ও অভিযোগের মাধ্যমে জানা যায়, ১৯৯৭ সালের ৩০ জুলাই তারিখে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভার বারোয়ারী বটতলী এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেনের মেয়ে আম্বিয়া খাতুনের সঙ্গে একই উপজেলার দিঘী সগুনা গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে সাইদুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের সময়ে পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন সাইদুর রহমান। পরে সাইদুর রহমান প্রমোশন পেয়ে হন উপ-পরিদর্শক (এসআই)।
২০১৩ সালে রাজশাহীর পুঠিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) থাকার সময় গোপনে ফারহানা ইতি নামে কাজের মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাইদুর রহমান। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়। আম্বিয়ার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। কয়েক মাসে সামান্য খরচ দিয়ে সন্তানসহ তাঁকে আলাদা রাখা হয়েছে। দু-চার মাস পর পর প্রথম স্ত্রীর বাসায় এসে নির্যাতন করে চলে যান সাইদুর।
২০১৯ সালের ১২ জুন স্বামী সাইদুর রহমান ও তাঁর পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করেন আম্বিয়া। পরে আইনি ঝামেলা এড়াতে শান্তিপূর্ণ সংসার করার শর্তে বাদীর সঙ্গে সমঝোতা করেন আসামি। এরপর মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে, দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে এক মেয়ে-ছেলের বাবা হন ওসি সাইদুর রহমান।
আবারও শুরু হয় অত্যাচার। ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি পুন:রায় সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে স্বামী ও তাঁর পরিবারের কয়েকজনের নামে মামলা করেন আম্বিয়া। আদালত গত ৯ জানুয়ারি সাইদুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে প্রায় ৫মাস ২৭ দিন আক্কেলপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সাইদুর রহমান। এ বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই গত ৬ জুলাই আদালত থেকে জামিন নেন ওসি সাইদুর রহমান।
ওই মামলার বাদী আম্বিয়া খাতুন মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়টা পারিবারিকভাবে একাধিক সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল। সমাধান না হওয়ায় গণমাধ্যমে এসব তথ্য দিয়েছি। তবে এখনও সমাধান হয়নি।
ওই মামলার এক নম্বর বিবাদী ওসি সাইদুর রহমানের ব্যক্তিগত ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠালেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা মুঠোফোনে জানান, এ ঘটনায় আক্কেলপুর থানায় ওসি সাইদুর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ওই থানার পরির্দশক (তদন্ত) আব্দুল মালেককে ওসি’র দায়িত্ব দিয়েছি।
এইচএ