প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২২, ০৬:০২ পিএম
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় একটি ষাড়ের নাম ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ অর্থাৎ কুড়িগ্রামের রাজা। গরুটির দাম ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রির আশা করছেন উপজেলার চাকিরপাশা ইউনিয়নের পাঠান পাড়া গ্রামের ছোট খামারী পারুল বেগম। সাড়ে তিন বছর বয়সী ১ হাজার কেজি ওজনের কিং অব কুড়িগ্রামকে দেখতে প্রতিদিন তার খামারে ভীড় করছে অনেক দর্শনার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা
যায়, উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের চাকিরপশার পাঠক পাড়া গ্রামের ইদ্রিস আলীর
স্ত্রী পারুল বেগম দীর্ঘ ৭ বছর আগে ৩টি বকনা বাছুর দিয়ে ক্ষুদ্রাকারে একটি খামার
শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে এই খামারে গরু বাড়তে থাকে। খামার দেয়ার ২ বছর পর থেকে
প্রতিবছর একটি করে গরু তিনি বিক্রি করেন। বর্তমানে দু’টি ষাড়, ৩টি
বকনা বাছুর ও ৩টি গাভীসহ তার খামারে গরু রয়েছে মোট ৮টি।
প্রায় সাড়ে ৩বছর পূর্বে একটি হলষ্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী থেকে জন্ম নেয় একটি বাছুর। ক্রমাগতভাবে বাছুরটি বাড়তে থাকে। বর্তমানে বাছুরটি একটি বিশাল ষাঁড়ে পরিনত হওয়ায় খামারের মালিক পারুল বেগমের স্বামী ষাঁড়টির নাম রেখেছেন ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’ অর্থ্যাৎ কুড়িগ্রামের রাজা।
পারুল বেগমের
সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগেও একাধিক ষাঁড় বিক্রি করেছিলেন
তারা। তবে এটি এত বিশাল আকৃতির হবে বুঝতেও পারেননি। বর্তমানে কুড়িগ্রামের রাজা
নামের এই ষাঁড়টির ওজন হয়েছে প্রায় ১ হাজার কেজি। প্রতিদিন ১০ কেজি দানাদার খাদ্যসহ
খড় ও কাঁচাঘাষ খাওয়াতে দিনে ৩- সাড়ে ৩শ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়।
খামারী পারুল
বেগমের ছেলে রিয়াদ বলেন, ‘গরুটি আমার বাবার সখের, মা
গরুটিকে লালন-পালন করছেন। বাবা ভালোবেসে নাম রেখেছেন ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’। গরুটি
দেখতে খুব সুন্দর তাই আশপাশের লোকজন দেখতে আসেন বাড়িতে। আবার বাড়ি পাশে বড় হাট না
থাকায় হাটে তুলতে পারছি না। এখন পর্যন্ত বাড়িতে এসে ৬ লাখ টাকা দাম বলে গেছে। আমরা
এর চেয়েও আরও বেশি আশা করছি, দেখা যাক কি হয়।’
খামারী পারুল
বেগম বলেন, ‘আমি দুইটা মাত্র গরু দিয়ে খামার শুরু করি
বর্তমানে আমার খামের গরুর সংখ্যা ৮টি। আগেও আরো ৮টি গরু বিক্রি করছি। এখন দুইটা
ষাঁড় রয়েছে, তার মধ্যে এটা আমাদের ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’।
দেখতে ভালো লাগায় এটাকে বড় করছি। খুব আদর করে গরুটিকে বড় করছি, বিক্রি
করলে খারাপ লাগবে। তারপরও আমরা এটাকে বিক্রি করব, আল্লাহ ভরসা।’
উপজেলা প্রাণী
সম্পদ অফিসের ভেটেনারী সার্জন পবিত্র কুমার বলেন, ‘ইদ্রিস আলী ও
পারুল বেগম দম্পতির লালিত ষাঁড়টি নাম রাখা হয়েছে ‘কিং অব কুড়িগ্রাম’। ষাঁড়টির ওজন
প্রায় ১ হাজার কেজির উপরে। আমাদের অফিসের নিবিড় তত্ত্বাবধানে ষাঁড়টি পালিত হয়েছে।
এই ষাঁড়টি নায্য মূল্যে বিক্রি হলে এই এলাকার অন্য খামারিরা উৎসাহিত হবে এবং
খামারের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি।’
কুড়িগ্রাম
প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে ছোট বড় গরুর খামারের সংখ্যা
১ হাজার ৭০টি। আর গরুর সংখ্যা প্রায় ৯ লাখেরও বেশি। তাদের তথ্যমতে- রাজারহাট
উপজেলার ‘কিং অফ কুড়িগ্রাম’ ষাঁড়টি জেলার সবচেয়ে বড়।
এস/এএল