
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২২, ১০:৫১ পিএম
বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান একটি দেশের কারিগরের নাম। এক
মহানায়ক ও এক অদম্য শক্তির নাম। যারা এই বঙ্গবন্ধুকে
ভালোবাসেন, তার সম্পর্কে জানতে মনের মাঝে হাজারো কৌতূহল
ভিড় করে। অথবা কেউ কেউ জানতে চান বাঙালির মাঝে স্বাধীনতার চেতনা জাগানো মহৎ এই
মানুষটির জীবনী। তাই সবাইকে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)
গড়ে তোলা হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’।
দেশের
অন্যসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠা পাওয়া গোপালগঞ্জের এই
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আছে লাইব্রেরি। বশেমুরবিপ্রবির লাইব্রেরিতেই স্থাপন করা
হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের
কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির গ্রাউন্ড ফ্লোরে ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চালু করা হয় এই
কর্নার। শুরুতে অল্প সংখক বই নিয়ে এর যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে
বই রয়েছে প্রায় ১৩০০। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ছড়া,
গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা, ইতিহাস, কল্পকাহিনি ও উপন্যাস।
কর্নারটিতে
রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে সংগৃহীত দেশ-বিদেশের
স্মৃতি বিজড়িত প্রায় পাঁচ শতাধিক স্থিরচিত্র। পাশাপাশি রয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের
বিভিন্ন প্রতিবাদী ও পাকবাহিনীর নির্যাতনের স্থিরচিত্র। সব মিলিয়ে কর্নারটি
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে জানতে চাওয়া যে কোনো জ্ঞান পিপাসুর কৌতূহল মিটিয়ে দেবে।
বঙ্গবন্ধু
সম্পর্কে জানতে চাওয়া আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এখানে ভিড় জমায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইয়ের
মাঝে ডুবে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, চিন্তা-চেতনা
সম্পর্কে জেনে মেটাতে পারে তাদের জ্ঞান তৃষ্ণা।
বঙ্গবন্ধু কর্নারে শিক্ষার্থীদের মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করতে লাইব্রেরি
কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা কর্নারটিকে সুসজ্জিত করে প্রয়োজনীয়
বসার ব্যাবস্থাসহ সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের নিশ্চিত করেছে।
বঙ্গবন্ধু
কর্নার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সিফাত সাব্বির বলেন,
‘ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু কর্নারটি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর জীবনীর মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতার একটি বিশেষ অধ্যায়
সম্পর্কে জানতে পারছে। তা ছাড়া কর্নারটি পৃথক থাকায় আমি যখনি লাইব্রেরিতে গিয়েছি
কিছুটা সময় সেই মহান স্বাধীনতার ঘোষকের ও স্বাধীনতার সেই সময়গুলো উপলব্ধি করেছি।’
লোক
প্রশাসন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন,
‘লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরি করার ফলে শিক্ষার্থীরা
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে পারছে। পাশাপাশি কর্নারটি তাদের নৈতিকতা ও
মননশীলতার উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত করতে ভূমিকা রাখবে।’
লাইব্রেরির
গ্রন্থাগারিক মো. নাছিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমদের
লাইব্রেরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান এই বঙ্গবন্ধু কর্নার। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা
থাকলে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীরা এখানে আসে। তারা বঙ্গবন্ধুকে নতুন করে
জানতে এই কর্নারটিতে ভিড় জমায়।’
এ
ছাড়াও বঙ্গবন্ধু কর্নারকে নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,
‘আমরা শিরগিরই কর্নারটির বর্ধিতকরণে এই একটি কক্ষ বাদ দিয়ে
সম্পূর্ণ একটি ফ্লোরে স্থাপন করব। বহুসংখ্যক বই আসলেও জায়গায় অপর্যাপ্ততার কারণে
রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রায় ছয় লাখ
টাকার বইয়ের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব এগুলো সংগ্রহ করা হবে।’
এএমকে/এএল