
প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২২, ০২:৩৬ এএম
প্রথম
কালবৈশাখী ঝড়ে ধানগাছ মাটিতে
নুয়ে পড়েছে। এরপর প্রায় প্রতিদিন
হচ্ছে বৃষ্টি। এ ছাড়া ইরি-বোরো ধান
কাটা-মাড়াই মৌসুমের শুরুতে আসে ঈদ। দেখা
দেয় শ্রমিক সংকট। শস্য ভাণ্ডার হিসেবে
খ্যাত বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকদের ভাগ্যাকাশে নেমে আসে দুর্যোগের
ঘনঘটা।
উপজেলার
সদর ইউনিয়নের দলগাছা গ্রামের কৃষক এরশাদ প্রামানিক
বলেন, ‘আমি এবার ১২
বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ
করেছি। ধান খুব ভালো
হয়েছিল। ঝড়ে ধান শুয়ে
পড়ার কারণে কাচা ধানগুলো আর
পাকেনি। আমার ১০ বিঘা
জমির ধান কাটা হয়েছে।
২ বিঘা জমির ধান
পানিতে থেকে নষ্ট হয়ে
গেছে। ওই ধান আর
কাটা সম্ভব না। যে ধান
কাটা হয়েছে সেগুলো প্রতি বিঘা ১৪-১৫
মণ ফলন হয়েছে।’
ভাটরা
ইউনিয়নের বামন গ্রামের কৃষক
তীর্থ সলির রুদ্র জানায়,
শ্রমিকের দাম ৭ হাজার
টাকা বিঘা। ধানের ফলন বিঘায় ১৩-১৪ মণ। এখন
ধান কাটা মানে শুধু
কৃষকের মনে বুঝ দেওয়া।
এবার বোরো ধান চাষ
করে কৃষকদের কিছুই থাকবে না। শুধু আমার এমন হয়েছে
তা নয়। বেশির ভাগ
কৃষক বোরো ধান চাষ
করে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
উপজেলা
কৃষি অফিস সূত্রে জানা
যায়, এ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায়
১৯ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে
ইরি-বোরো ধান চাষের
লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার
উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১
লাখ ২৭ হাজার ৬৩২
মেট্রিক টন ধান।
পৌর
এলাকার কৃষক মকছেদ আলী
জানান, আমার চার বিঘা
জমির ধান নষ্ট হয়ে
গেছে। কালবৈশাখী ঝড়ে ধানগুলো শুয়ে
পড়ে। এরপর মাঝে মাঝে
বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ওপর পানি জমে
সেগুলো নষ্ট হয়েছে। সময়মতো
শ্রমিক পেলে ধান কাটা
যেত। এখন শ্রমিক পেয়েও
লাভ নাই। কারণ সব
ধান শেষ হয়ে গেছে।
ধান পচে তাতে নতুন
গাছ বের হয়েছে।
উপজেলার
থালতা কৃষক মানিক চন্দ্র
সরকার বলেন, ‘আমি ৯ বিঘা
জমিতে বোরো ধান চাষ
করেছি। ৫ বিঘা জমির
ধান কাটা হয়েছে। প্রতিদিনই
ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। ধান কাটা শ্রমিকের
দাম প্রায় দ্বিগুণ। ধানের ফলনও অর্ধেক। এ
কারণে জলে থাকা ধান
কাটব কি না ভাবছি।’
উপজেলা
কৃষি কর্মকর্তা আদনান বাবু বলেন, ‘বুধবার
পর্যন্ত নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৪৯ শতাংশ ক্ষেতের
ধান কাটা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে বোরো ধানের ক্ষতি
হয়েছে। তবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা
অর্জিত হবে বলে আশা
করছি। যত দ্রুত সম্ভব
পাকা ধান কাটতে হবে।’
এএমকে