
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২২, ০৯:১৩ পিএম
দিনাজপুরের
ফুলবাড়ীর দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকদের টানা মাসব্যাপী পরিবার পরিজন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি
অব্যাহত রয়েছে। তারা চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামে স্ব-স্ব কর্মস্থলে
যোগদানসহ করোনাকালীন বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে
এই কর্মসূচি পালন করছে।
পূর্বঘোষিত
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার
(১২ এপ্রিল) সকাল
১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি গেট
থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল
বের করা হয়। মিছিলটি
কয়লা খনি বাজার প্রদক্ষিণ
করে খনি গেটে এসে
শেষ হয়। পরে সেখানে
অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ
সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক
কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক
আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিকের
স্ত্রী খুকু মনি, শ্রমিক
নেতা জাকির হোসেন, এরশাদ আলী ও এহছানুল
হক সোহাগ প্রমুখ।
সমাবেশে
বক্তরা বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে সরকারের ঘোষণা
অনুযায়ী সব সরকারি-বেসরকারি
ও স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠান পূর্বের মতো চালু হলেও
অজ্ঞাত কারণে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আমাদের
স্ব-স্ব কর্মস্থলে খনি
কর্তৃপক্ষ যোগদানের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ
করেননি। একই সঙ্গে খনি
কর্তৃপক্ষ ঘোষিত করোনাকালীন বেতন-ভাতা না
পাওয়ায় আমরা পরিবার নিয়ে
মানবেতর জীবনযাপন করছি।
তারা
আরও বলেন, প্রায় দুই বছর আগে
বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে কর্মরত ১১৪৭ জন বাংলাদেশি
শ্রমিককে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়।
এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে
৪০০ জন শ্রমিককে খনির
ভেতরে থেকে কাজ করার
শর্তে ফেরত নেয়। বাকি
৭৪৭ জনকে কাজে যোগদানের
সুযোগ না দিয়ে বেতন
বন্ধ রাখে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময়
খনির অভ্যন্তরে যে সব শ্রমিক অবস্থান
করছিলেন তাদেরও ছুটি দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা
আরও বলেন, ছুটি দেওয়ার সময়
কথা ছিল শ্রমিকদের প্রতি
মাসে ৪৫০০ টাকা করে
দেওয়া হবে। কিন্তু গত ৯ মাস
ধরে তা আর দেওয়া
হচ্ছে না। অবিলম্বে এ সব
শ্রমিকদের কাজে যোগদানসহ বকেয়া
পাওনা বেতন-ভাতা প্রদানের
দাবি জানান তারা।
গত
১০ মে খনির অভ্যান্তরে
মনমেলা সভা কক্ষে আন্দোলনকারী
শ্রমিকদের ২০ সদস্যের একটি
প্রতিনিধি দলের সঙ্গে খনি
কর্তৃপক্ষ এক বৈঠকে বসেন।
সেখানে আন্দলনকালী শ্রমিকদের মধ্য থেকে ৬০০
জনকে কাজে যোগদানের প্রস্তাব
দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকেরা করোনাকালীন ৯ মাসের বকেয়া
ভাতাসহ সব শ্রমিকদের স্ব
স্ব কাজে যোগদানের দাবি
জানিয়ে ওই আলোচনা প্রত্যাখ্যান
করে চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।
বিষয়টি
নিয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি
লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খানের
সঙ্গে মুঠোফোনে জানান, চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান
সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কথা বলে প্রথমে
৪০০ জন শ্রমিককে কাজে
যোগদান এবং পরে আরও
২০০ শ্রমিকসহ মোট ৬০০ জন
শ্রমিককে কাজে যোগদানের বিষয়ে
প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকেরা
তা প্রত্যাখ্যান করে খনি গেট
উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি
জানান।
এ সব
দাবি নিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা
খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন গত ১১ এপ্রিল
খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি
প্রদান করেন। ওই দিন ঘোষিত
কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি
পালন করে আসছেন তারা।
এএমকে/এএল