ময়মনসিংহ ব্যুরো
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গোয়াতলা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের এম কে বি-২ ইটভাটার গ্যাস ও আগুনের তাপে প্রায় ৫০ একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ ইটভাটায় নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র।
ভুক্তভোগী এলাকার কৃষকদের দাবি, চার-পাঁচ দিন আগে ইটভাটার মালিকপক্ষ ইট পোড়ানোর সর্বশেষ আগুন উপর দিয়ে না ছেড়ে রাতের আঁধারে নিচ দিয়েই ছেড়েছে। ফলে এই খোলার পশ্চিম দিকের আগুনের তাপে ও গ্যাসে প্রায় ৫০ একর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফৌজিয়া নাজনীন ও কৃষি কর্মকর্তা মাঠে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাটার পশ্চিমে প্রায় ৩০ একর বোরো ধানের জমি গ্যাস ও আগুনের তাপে নষ্ট হয়ে গেছে।
এক কৃষক বলেন, আমি ঋণ করে ফসল করেছিলাম, আমার একমাত্র শেষ অবলম্বনটুকুও নষ্ট করে দিয়েছে, আমি সরকারের কাছে এর বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, কী লাভ হবে বলে, ফসলি জমির ওপর একটি ইটভাটা কীভাবে অনুমোদন পায়, যার একশ গজের ভেতরে রয়েছে একটি মাদ্রাসা, এক হাজার গজের মধ্যে রয়েছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উপজেলার সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী যে সব প্রতিষ্ঠানে- একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাদ্রাসা, তিনটি মসজিদ, একটি মন্দির, একটি বাজার। এর বায়ুদূষণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম কে বি-২ ইটভাটার মালিক মো. ছাফিল উদ্দিন বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ আছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না।
ধোবাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার তুষার বলেন, ইটভাটার ধোঁয়া বের করা হয় সাধারণত চিমনি দিয়ে, কিন্তু এখানে চিমনি দিয়ে গ্যাস বের না করে সরাসরি নিচে গ্যাস চেম্বার খুলে দেওয়ার কারণে ফসল নষ্ট হয়েছে। আমাদের তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ একর হবে।
ডিসি অফিসে এর রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। আশা করি, কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, আমরা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি এবং প্রতিবেদনও পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক কৃষকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এফএ/এএল
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন