ওয়াহিদুল ইসলাম ডিফেন্স, ফুলবাড়ী প্রতিনিধি
দুই দফা দাবিতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে কর্মরত শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রবিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির প্রধান গেট থেকে কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে খনি এলাকায় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি খনি এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে শেষ হয়।
খনির গেট সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিক নেতা এহসানুল হক সোহাগ, এরশাদ আলী, আবু তাহের প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, খনির সূচনালগ্ন থেকেই আন্দোলনকারী শ্রমিকরা কয়লা উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে কয়লা উৎপাদন সচল রেখেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ওই সময় শ্রমিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে কয়লা উত্তোলন অব্যাহত রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী খনির লকডাউন উঠে গেলেও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি যেসব শ্রমিক বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তাদেরকে তাদের স্ব স্ব কর্মস্থলে ফেরানোর বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত নেননি কর্তৃপক্ষ। একইভাবে খনি কর্তৃপক্ষ ঘোষিত করোনাকালীন বেতন-ভাতা প্রদানের পদক্ষেপ নেননি। এ কারণে শ্রমিকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শ্রমিকদের দুই দফা দাবি মেনে না নিলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে খনির গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান। পরে তারা খনি গেটে সিকিউরিটি সুপারভাইজারের মাধ্যমে দুই দফা দাবি সম্বলিত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কোম্পানি লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে কর্মরত প্রায় ১ হাজার শ্রমিক রয়েছে এর মধ্যে করোনার কারণে ৪৫০ থেকে ৫০০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন। ওই সময় যেসব শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে তারাও বেতন ভাতা দাবি করছে। কিন্তু চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনও তাদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়ত তাদের কাজে নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘খনি কর্তৃপক্ষ ইতিপূর্বে ওইসব শ্রমিকদের এককালীন অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পুনরায় অর্থ সহায়তার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’
এসএ/এএল
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন