নোয়াখালী প্রতিনিধি
বেগমগঞ্জের হাজীপুরে বাবার কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে চার বছরের শিশু তাসফিয়া মারা যায়। এ ঘটনায় আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) ভোরে কবিরহাট উপজেলায় জসিম উদ্দিনকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। জসিম উদ্দিন বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এখনও গ্রেফতার হয়নি হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মো. রিমন, মো. বাদশা, মো. মহিন, মো. রফিকসহ অন্য সহযোগীরা।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক বলেন, ’শিশু তাসফিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার আসামি জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেফতার জসিম উদ্দিনকে দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এর আগে একই মামলায় গ্রেফতারকৃত অন্য তিন আসামির বিরুদ্ধেও আদালতে সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। তবে ওই আবেদনের এখনও শুনানি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাসফিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত মূল আসামি রিমন, বাদশা, মহিন, রফিকসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। রাতেও বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে, কিন্তু তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। আশা করছি, শিগগির তারা ধরা পড়বে।
৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে তাসপিয়া হত্যায় অভিযুক্ত মূল আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার বাবা আবু জাহের। তিনি বলেন, ‘আমি আমার কলিজার টুকরার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে জান্নাতুল ফেরদাউস তাসফিয়া নিহত হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তার বাবা প্রবাসী মাওলানা আবু জাহের। বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পূর্ব হাজীপুর গ্রামের মালেকার বাপের দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ধনু নামে এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। আহত মাওলানা আবু জাহেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব হাজীপুর গ্রামের রাশেদ মিয়া পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের বাদশার কাছে মাটি বিক্রি করেন। কিন্তু বাদশা চুক্তির চেয়ে অতিরিক্ত মাটি কেটে নিতে চাইলে গত দুই দিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বিরোধ চলে আসছিল। এক পর্যায়ে বুধবার বিকালে বাদশা তার এলাকার রিমনসহ চার-পাঁচ সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলে এসেই এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ঘটনাস্থলে থাকা প্রবাসী জাহের ও তার মেয়ে তাসফিয়া গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় তাসপিয়ার মৃত্যু হয়।
এফএ
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন