
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২২, ০৭:৩৮ পিএম
মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঝালকাঠি
সকালে
ঘুম থেকে উঠে দেখা
যায়, পূর্ব আকাশে সূর্যের দিকে তাকিয়ে উঁকি
দিচ্ছে হাজারো সূর্য। এমন অপরূপ চোখ
ধাঁধানো দৃশ্য দেখা যাচ্ছে ঝালকাঠির
রাজাপুরে বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে। সূর্যমুখী
ফুলের অপরুপ দৃশ্যে যেন হলুদ বরণ
সাজে সেজেছে প্রকৃতি। যতদূর চোখ যায়, সূর্যের
দিকে মুখ করে হাসছে
এ ফুল। এমন মনোরম দৃশ্য
দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
এ উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মাঠের পর মাঠ ফুটে থাকা সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে কৃষকের চোখে-মুখে স্বপ্ন পূরণের আশা দেখা যাচ্ছে।
ঝালকাঠির
রাজাপুর একটি কৃষি প্রধানউপজেলা। বছরজুড়ে এখানকার
বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে ফসল
চাষ করা হয়। তাই
বর্তমানে এখানে অন্যান্য ফসলের সঙ্গে ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী।
রাজাপুর উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজাপুর সদর ইউনিয়ন, শুক্তাগড় ইউনিয়ন, মঠবাড়ি ইউনিয়ন ও বড়ইয়া ইউনিয়নের কৃষকরা সূর্যমুখী চাষ করছেন। এ বছর উচ্চফলনশীল আরডিএস ২৭৫, হাইসান-৩৩ ও বারি সূর্যমুখী-৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে বীজ, সার ও ওষুধসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে।
কৃষি
অফিস সূত্রে আরও জানা গেছে,
গত বছর উপজেলায় ৩০
হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছিল।
এ বছর চাষ করা হয়েছে ৩৫
হেক্টর জমিতে। চাহিদা এবং ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা সূর্যমুখী চাষের দিকে ঝুঁকছেন। অনেক
পতিত জমিতে কৃষি চাষের আওতায়
আনার লক্ষ্যে কৃষকদের বাড়তি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।
আমাদের দেশে সূর্যমুখী তেলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কোলেস্টেরলমুক্ত এ তেল উৎপাদনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে এর ব্যাপক চাষাবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সূর্যমুখী একটি অতি লাভজনক ফসল, এবার ভাল ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ভাল ফলন এবং লাভবান হবার আশা করছেন চাষিরা।
সূর্যমুখী
ক্ষেত ঘুরে দেখতে এসে মো. সাব্বির
হোসাইন বলেন, ‘সূর্যমুখী হলুদ ফুলে ছেয়ে
গেছে। তাই বন্ধুদের সঙ্গে
একটু দেখতে ও ছবি তুলতে
আসলাম। এখানে এসে সূর্যমুখী ক্ষেত
ঘুরে দেখতে ও ছবি তুলতে
পেরে অনেক ভাল লাগছে।’
পূর্ব রাজাপুর এলাকার কৃষক নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘গত বছর সূর্যমুখীর চাষ করে সফল হয়েছি। তাই এ বছর এক বিঘা জমিতে এ ফুলের চাষ করেছি। ফলন অনেক ভাল। আশা করছি, গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি লাভ করতে পারবো।’
একই এলাকার কৃষক মো. রাকিব বলেন, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি কৃষি কাজ করি। এবার এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি লাভবান হতে পারবো।’
রাজাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রিয়াজ উল্লাহ বাহাদুর বলেন, ‘এ বছর রাজাপুর উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলন খুব ভাল হয়েছে। আমরা চাষিদের সরকারিভাবে বীজ, সার, ওষুধ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি। আশাকরি ভাল ফলন এবং চাষিরা বেশ লাভবান হবে।’
কোলেস্টেরলমুক্ত
সূর্যমুখী তেল উৎপাদনে বাংলাদেশ
আরও এগিয়ে যাবে এবং তেল
উৎপাদনে বাংলাদেশ হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাজাপুর উপজেলা
কৃষি অধিদপতর।
এএমকে/এএল