গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে অন্যান্য বছর ১ জানুয়ারি নতুন বই তুলে দেওয়া হলেও এ বছর তা সম্ভব হয়নি। চলতি ২০২২ শিক্ষাবর্ষের ৩ মাস অতিবাহিত হলেও একেকজন শিক্ষার্থী ১৪টি নতুন বইয়ের মধ্যে পেয়েছে শুধুমাত্র একটি বইটি।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৩ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা বই না পাওয়ায় শিক্ষকরাও তাদের পাঠদান করাতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন।
বুড়াইল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী লিওন রহমান বলে,নতুন ক্লাসে উঠেছি। নতুন বই পড়ব। আমাকে স্যার একটি বই দিয়েছেন। বাকি বই এখনো আসেনি। পরে দেবে বলেছেন। সব বই না পাওয়ায় মনটা খারাপ।
গুনভরি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু সাইদ বলে, স্যাররা পুরোনো বই দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করান। কিন্তু আমাদের কাছে বই না থাকায় বাড়িতে গিয়ে পড়তে পারি না। তাই শ্রেণিকক্ষে পড়া বুঝে দিতেও পারিনা।
এদিকে বই না পাওয়ায় চিন্তিত অভিভাবকেরাও। উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, আমার ছেলে একটা বই পেয়েছে। বই না পাওয়ায় বাসায় ঠিকমতো পড়াতে পারি না। নিয়মিত স্কুলেও যেতে চায়না। ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
তিনি আরও বলেন, করোনার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এমনিতেই ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায় অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এখন আবার তারা বই পাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।
মানিককোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, বই না থাকার কারণে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা পড়া দিতে পারে না। একারণে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেকটাই কমে গেছে। অভিভাবকদের বুঝিয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো হচ্ছে।
বুড়াইল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহিম আকন্দ সেলিম বলেন, নতুন বই না পেলে শিক্ষার্থীরা পড়তে চায়না। বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। অতি দ্রুত শিক্ষার্থীরা যেন বই পায় সেজন্য তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান করেন।
এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ মনিরুল হাসান বলেন, ফুলছড়ি উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। ছাপাখানা থেকে চাহিদা অনুযায়ী এখনো নতুন বই সরবরাহ করা হয়নি।
সাজেদ/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন