সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিখোঁজের চার দিন পর আবদুর রহমানের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় লাশের মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশ এসিডে পোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। লাশ পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ও খালাতো ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে আবদুর রহমানের প্রেমিকাসহ মামলার চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর প্রেমিকা আয়শা খাতুন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহজাদপুর থানার এসআই খলিলুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার (২৯ মে) বিকেলে শাহজাদপুর চৌকি আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানির আদালতে আয়শা খাতুনকে তোলা হয়। সেখানে হত্যার দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন আয়শা খাতুন।
জবানবন্দিতে আয়শা জানান, এক বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী হারান আয়শা খাতুন। তাদের বাড়িতে স্বামীর খালাতো ভাই আব্দুর রহমানের আগে থেকেই যাতায়াত ছিল। স্বামীর মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। যা এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে রূপান্তরিত হয়।
বিষয়টি টের পেয়ে আয়শার দেবর নজরুল ইসলাম ক্ষুব্ধ হয়। এরপর নজরুল আব্দুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার (আয়শা) সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে দেয়। এর সঙ্গে যুক্ত করে আয়শার ছোট ভাই আনিছ প্রামানিককে।
তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯ মে গভীর রাতে আব্দুর রহমানকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আসেন আয়শা। এরপর তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তারা। হত্যার পর লাশের মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন অংশ এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে পাশের গোপিনাথপুর গ্রামের ধানক্ষেতে লাশ ফেলে দেয়া হয়।
নিহত আবদুর রহমান শাহজাদপুরের চর বেলতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত শামছুল প্রামানিকের ছেলে।
গত ১৯ মে রাত থেকে নিখোঁজ হন আবদুর রহমান। ২৩ মে ধানক্ষেত থেকে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই শাহজাহান প্রামাণিক বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওইদিনই মামলার আসামি নিহতের চাচাতো ভাই আবুল কালাম (৪৫), আব্দুস সালাম (৫০) ও মনিরুজ্জামানকে (৪০) গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে শুক্রবার (২৮ মে) গভীর রাতে আয়শা খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুর রহমানের বন্ধু নজরুল ইসলাম (৩৫) ও আয়শার ছোট ভাই আনিছ প্রামানিককে (২৫) আটক করা হয়।
এএএম/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন