প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২২, ১১:২০ পিএম
নিয়ন্ত্রণে আসার পর লালমনিরহাটে সেই হাতিকে অবশেষে ট্রাকযোগে সিরাজগঞ্জে পাঠালেন দি লায়নস সার্কাসের মালিক। এ সময় হাতিটি এলাকাবাসীকে সালাম দিয়ে চোখের পানি ফেলে। এ দৃশ্য দেখে অনেকে কেঁদে ফেলেন।
২ মার্চ বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট বঙ্গবন্ধু কলোনি মাঠ থেকে ট্রাকে তোলা হয় হাতিটিকে।
পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্পমেলার সার্কাসে হাতিটিকে আনা হয়েছিল। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে শিকল ছিঁড়ে লালমনিরহাট জেলা শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করেছিল হাতিটি। মাহুতসহ সার্কাস দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে ব্যর্থ হয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। দীর্ঘ চেষ্টার পর তারাও ব্যর্থ হয়েছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. তপন কুমার দে’র নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি টিম এসে হাতিটিকে ২৭ ঘণ্টা পর ট্র্যাঙ্কুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করে নিয়ন্ত্রণ করে। এতে অবসান হয় এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির।
শ্বাসরুদ্ধকর এ অভিযানে অংশ নেন গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের মোস্তাফিজুর রহমান, বন্যপ্রাণী চিকিৎসক সুমন বাড়ই এবং ড. তপন কুমার দে, অব. উপ-প্রধান বন সংরক্ষক। অভিযানটি সার্বিক পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করেন বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সার্কেল মোল্যা রেজাউল করিম।
হাতি নিযন্ত্রণে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বন্যপ্রাণী রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় এক ইতিহাস সৃষ্টি করলো বন বিভাগ।
দি লায়নস সার্কাসের স্বত্বাধিকারী নিরঞ্জন সরকার বলেন, ‘হেলিকপ্টার ভাড়া, চিকিৎসক ও হাতি উদ্ধারে সম্পূর্ণ টাকা খরচ করেছি। আয়োজকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের কাছে খরচ নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, হাতিটিকে ট্র্যাঙ্কুলাইজার যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করা হয়। অচেতন হাতিটি জ্ঞান ফিরে আবারও তাণ্ডব চালাতে পারে- এমন ধারণা করেছিল এলাকাবাসী। পরে মেলার আয়োজকরা হাতির মালিককে হাতি সরিয়ে নিতে বলেন। সেজন্য হাতিটিকে সিরাজগঞ্জ পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) আয়োজিত শিল্পমেলার পরিচালক সাগর খান বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর হাতিটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে হাতিটিকে এখান থেকে সরানো হচ্ছে।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক জানান, হাতিটিকে বেশ কয়েকটি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। যদি আবার জেগে তাণ্ডব চালায়, সে কারণে তাকে জেলার বাইরে পাঠানো হয়েছে।
ডা/