প্রকাশিত: মার্চ ২, ২০২২, ০৩:২৯ এএম
লালমনিরহাটে
পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির
হস্ত কুটির শিল্প পণ্য মেলায় দি
লায়ন সার্কাসের সংক্ষুব্ধ হাতিটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। গত
২৭ ঘণ্টা পর ট্র্যাঙ্কুলাইজার যন্ত্রের
মাধ্যমে অচেতন করে এটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা
হয়। অবসান হয় এক শ্বাসরুদ্ধকর
পরিস্থিতির।
মঙ্গলবার
(১ মার্চ) দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. তপন কুমার
দের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি
টিম এসে হাতিটিকে অচেতন
করেন। হাতি নিযন্ত্রণে হেলিকপ্টার
ব্যবহার করে বন্যপ্রাণী রক্ষার
দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের জীবন
ও সম্পদ রক্ষায় এক ইতিহাস সৃষ্টি
করলো বন বিভাগ।
এর
আগে সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টা পায়ের
শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে লালমনিরহাট জেলা
শহরের সাহেবপাড়ায় তাণ্ডব শুরু করে হাতিটি।
মাহুতসহ সার্কাস
দলের সদস্যরা একে শান্ত করতে
ব্যর্থ হয়। পরে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রশাসন
ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয় তারা। দীর্ঘ
চেষ্টার পর তারাও ব্যর্থ
হয়।
শ্বাসরুদ্ধকর
এ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুরের মোস্তাফিজুর রহমান, বন্যপ্রাণী চিকিৎসক, জনাব সুমন বাড়ই,
কম্পাউন্ডার এবং ড. তপন
কুমার দে, অব. উপপ্রধান
বন সংরক্ষক। অভিযানটি সার্বিক পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করেন
মোল্যা রেজাউল করিম, বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী
ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সার্কেল।
স্থানীয়
সূত্র জানা যায়, পুলিশ
নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) লালমনিরহাটের আয়োজনে পুনাক হস্ত কুটির শিল্প
পণ্য মেলায় আনা হাতিটি হঠাৎ
করে পায়ের শিকল ছিঁড়ে বেরিয়ে
পড়েন লালমনিরহাট জেলা শহরে। এ সময়
বেশ কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালায়। পরে মাহুতসহ দি
লায়ন সার্কাস দলের সদস্যরা একে
শান্ত করতে গেলে আরও
উত্তেজিত হয়ে রাস্তার গাছপালাসহ
মানুষের ওপর আক্রমণ করে।
এ
ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে
সার্কাস দলের সদস্যরা ব্যর্থ
হয়ে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ
ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।
লালমনিরহাট
পুলিশ ও রংপুর বনবিভাগের
সহায়তায় রিজার্ভ হেলিকপ্টার যোগে বন বিভাগের একটি
চৌকস বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা দল গঠন করে
প্রধান বন সংরক্ষক মো.
আমির হোসাইন চৌধুরী মহোদয়ের নির্দেশনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসেন বন বিভাগের
একটি দল।
মঙ্গলবার
সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে
ড. তপন কুমার দের
নেতৃত্বে একটি টিম লালমনিরহাটে
সকাল ১১টায় আসেন। এ সময় একটি
বাঁশ বাগানে নিয়ে হাতিটিকে ট্র্যাঙ্কুলাইজার
যন্ত্রের মাধ্যমে অচেতন করা হয়।
উন্মত্ত
অবস্থায় হাতিটি মানুষের জীবন ও সম্পদের
জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়। সংবাদ
পাওয়া মাত্রই বিষয়টি অতি গুরুত্বের সঙ্গে
গ্রহণ করে স্থানীয় বন
বিভাগ, পুলিশসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ
রক্ষা করে হাতিটি নিয়ন্ত্রণে
আনার নিরলস প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়। অবসান
হয় ২৭ ঘণ্টার এক
শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির।
বন্যপ্রাণী
অপরাধ দমন ইউনিটের সার্জন
ড. তপন কুমার দে
বলেন, দুপুরে হাতিটিকে ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে অচেতন
করা হয়েছে। ট্রাঙ্কুলাইজার গান দিয়ে অচেতন
করার ওষুধ প্রয়োগের পর
হাতিটি দৌড়ে বাঁশ বাগানে
আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে এটি অচেতন আছে। হাতিটি প্রায়
এক সপ্তাহ অচেতন থাকবে বলেও তিনি জানান।
এএমকে/ডা