• ঢাকা মঙ্গলবার
    ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

বগুড়ায় শিশুকে হত্যার পর জিনের কাণ্ড বলে প্রচার

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২, ০৮:২৮ পিএম

বগুড়ায় শিশুকে হত্যার পর জিনের কাণ্ড বলে প্রচার

বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দেড় বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার পর জিনের কারসাজি বলে প্রচার করেন চাচা। জেলার কাহালু থানার ওসি আম্বার হোসেন জানান, এ হত্যার অভিযোগ নিয়ে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় থানায় আসেন তার স্বজনরা।

ওসি জানান, নিহত শিশু সাবা জেলার কাহালু উপজেলার দামাই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে।

ওসি জাহাঙ্গীর জানান, গত শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তার বড় মেয়ে জেরিন (৯) ও ছোট মেয়ে সাবা প্রতিবেশী হাফিজার রহমানের বরইগাছের নিচে বরই কুড়াতে যায়।

পরে হাফিজা রহমানের কাছে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি জেরিন অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে আর সাবা মারা গেছে। ঘটনাটিকে জিনের কাণ্ড বলে প্রচার চালানো হয় এলাকায়। জানা যায়, পুলিশকে না জানিয়েই সাবার লাশ দাফন করা হয়। পরে জেরিনকে বগুড়া শহরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সাবার খালু মান্নান মিয়া জানান, ঘটনার তিন দিন পর সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) জেরিনের জ্ঞান ফিরলে সে জানায়, তার চাচা রেজওয়ান লাঠি দিয়ে আঘাত করে সাবাকে মেরে ফেলেছে। জেরিন এগিয়ে গেলে তাকেও লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সে জ্ঞান হারায়। সাবার দাফনের সময় আমরা রেজওয়ানকে পাইনি।

জমির বিরোধের জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে।

মান্নান বলেন, ভূতের কাণ্ড বলে প্রচার চালানোর পাশাপাশি আবদুল আলিম নামে এক হুজুরের কাছ থেকে একটি কাগজ নিয়ে এসেছেন রেজওয়ানের ভাই নূরুল ইসলাম। সেই কাগজে লেখা আছে, ‘বদমেজাজি জিন সাবাকে হত্যা করেছে। ওই জিন থেকে বাঁচতে হলে পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা লাগবে।’

হুজুর আব্দুল আলিম বলেন, 'নুরুল ইসলাম আমার কাছে আসার পর তার কথা শুনে বুঝতে পারি ওটা বদ জিন। আমি তাকে আমার প্যাডে  লিখে দিই, বদ জিনকে বন্দি করতে পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা লাগবে'।

আবদুল আলিম এলাকায় ‘লাখো দাওয়া এক দোয়া চিকিৎসালয়’ নামে একটি দোকান চালান।

এদিকে মোবাইল ফোনে চেষ্টার পর বাড়িতে গিয়েও নুরুল ইসলাম ও তার ভাই রেজওয়ানকে পাওয়া যায়নি। তাদের বড় ভাই রুহুল আমিন বলেন, 'জিনই সাবাকে হত্যা করেছে। এখানে আমার ভাই জড়িত নয়।’

এর ১০ দিন আগে গ্রামে আতাউর নামে একজনকে গাছ কাটতে স্বপ্নে মানা করে জিন। কথা না শোনায় জিন তাকে হত্যা করে। আতাউরের মৃত্যুর মজলিসে খেয়ে ফেরার পথে সাবাকে হত্যা করে জিন। আমার ভাই রেজওয়ান এই হত্যার সঙ্গে জড়িত না। কবিরাজ আবদুল আলিমও জিনের কথা বলেছেন।

অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি আম্বার হোসেন।


ডিআইএন/এফএ

 

 

 

আর্কাইভ