দেশজুড়ে ডেস্ক
ছুটি পেলেই বিনোদনের আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে ছুটে আসতেন মানুষ। ঈদের ছুটি বা কোনোভাবে দেশ তিন থেকে চারদিনের ছুটির ফাঁদে পড়ে গেলে কক্সবাজারে পা ফেলার উপায় থাকতো না। রাত্রিযাপনের জন্য হোটেলে জায়গা পাওয়া কষ্টকর হয়ে যেত। পর্যটকদের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠতো হোটেল ব্যবসা। কক্সবাজারের সেই সব হোটেলের এখন নাজুক অবস্থা। পর্যটকের অভাবে হোটেলের রুমগুলো ধূলোয় ধুসারিত হতে চলেছে।
করোনাভাইরাস আর লকডাউনের কারণে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল পর্যটকের অভাবে ধুঁকছে। কোনো কোনো হোটেলকে দৈনিক লাখ টাকাও লোকসান দিতে হচ্ছে। নামী হোটেলের লোকসানের হারটা আরও বেশি। কর্মচারীর বেতন আছে, বিদ্যুৎ বিল আছে, ব্যাংকের কিস্তিসহ আরও নানান খাতে ব্যয় রয়েছে। কিন্তু আয় নেই। ফলে লোকসান বেড়েই চলেছে।
এপ্রিলের শুরু থেকে হোটেলে কোনো পর্যটক নেই। লকডাউন হওয়ায় হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ লোকসান কমানোর পথ বেছে নিয়েছেন। কর্মচারীদের ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। নূন্যতম কর্মচারী রেখেছেন। তারা হোটেল পাহারা দিয়ে সময় পার করছেন।
হোটেল মালিকরা বলছেন, করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে টানা পাঁচ মাস হোটেল- রেস্তোরা বন্ধ ছিল। ১৭ আগষ্টের পর খোলার প্রস্তুতি নিতেই পার হয়ে যায় প্রায় দুই মাস। পরে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কিছুটা ব্যবসা হয়েছে। করোনার কারণে মার্চে আবার ভাটার টান শুরু হয়। আর এপ্রিলের শুরুতে লকডাউন সব স্তদ্ধ করে দিয়েছে।
লকডাউন থাকলেও শহরের মার্কেট, দোকানপাট সব খোলা রয়েছে। খোলা যাচ্ছে না শুধু হোটেল। এমনটা কারো কারো কাছে হাস্যকর। তাদের মতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৈকতে সীমিত পরিসরে হলেও ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া উচিত। অন্যথায় পর্যটন খাতে চরম ধস নেমে আসবে। ছোটোখাটো ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে।
কক্সবাজারের হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি লায়ন এম এন করিম বলেন, পর্যটন শিল্পে অশনি সংকেত এনেছে করোনাভাইরাস। ব্যাংক ঋণের চক্রবৃদ্ধি সুদ দিন দিন বোঝা বাড়াচ্ছে। বাড়ছে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার শঙ্কাও। এভাবে চলতে থাকলে দেউলিয়া হতে হবে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পর্যটন ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা ও সহজ শর্তে ঋণই কেবল পারে এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে।
শামীম /২৮ মে/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন