• ঢাকা রবিবার
    ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১

সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর ছড়িয়ে আছে চারশতবর্ষী বটগাছ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২, ০৯:৫২ পিএম

সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর ছড়িয়ে আছে চারশতবর্ষী বটগাছ

সিরাজুল ইসলাম শিশির, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সরাইদহ চরপাড়া গ্রামে প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমি জুড়ে বিস্তৃত, কালের সাক্ষী হয়ে প্রায় চারশত বছর ধরে দাঁড়িয়ে  আছে একটি বটগাছ। গাছের শাখা, প্রশাখা ডালপালা মাটির সঙ্গে তৈরি করেছে এক আঙ্গিক সর্ম্পক। শীতল ছায়া আর পাখির কলকাকলি। সেইসঙ্গে সবুজ শ্যামল এই বটগাছের নিচে যে কেউ এসে বসলে মনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। পথচারী দর্শনার্থীদের আর্কষণ করে এই অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। তাই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক নজর দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে দর্শনার্থীরা।

ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ভূঞাগাঁতী বাসস্ট্যান্ড থেকে উত্তর দিকে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়বে বিশাল আকৃতির একটি বটগাছ। স্থানীয় লোকজনের মতে, প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর বিস্তৃত বটগাছটি অন্তত চারশত বছরের পুরোনো। গাছকে কেন্দ্র করে দূর-দূরান্তের মানুষ আসেন এক নজর দেখতে। বটবৃক্ষটির ছড়িয়ে থাকা একেকটি ডালপালা শাখা,-প্রশাখা দেখলেই মনে হয় পরম মমতায় বাড়িয়ে দেয়া হাত। বাচ্চা ছেলেমেয়েদের জন্য বটগাছটি প্রধান খেলার যায়গা, যখনই সময় পায় তখনেই দলবদ্ধভাবে তারা এই গাছের নিচে খেলাধুলায় মেতে উঠে।


বটগাছটি অনেক বড় হওয়ায় কখনও তারা বটগাছে বেয়ে উপড়ে উঠে, আবার কখনও গাছের শাখা-প্রশাখা ধরে দোল খেলে। গাছের নিচে বসলে প্রকৃতির প্রেমে পড়ে যায় ঘুরতে যাওয়া দর্শনার্থীরা। আগে বটতলায় অনেক সাধু-সন্ন্যাসী ধ্যানে মগ্ন হতেন, এখন তাদের দেখা না মিললেও হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই গাছটি দেখতে আসেন। অনেকে মানত পূরণ করার জন্য আসেন।

শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয় পুরানো প্রাচীন বটতলায় প্রতিবছর জেষ্ঠ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার চরপাড়া মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে এই গ্রামে। প্রতিটি বাড়িতে অতিথির আগমন ঘটে। মেলায় হিন্দু মুসলমানসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয় মেলাতে থাকে বিভিন্ন রকম খাবার খেলার আয়োজন নাগরদোলা, লাঠিখেলা ছুড়িখেলাসহ বিভিন্ন খেলায় মেতে ওঠে এলাকার মানুষ।


প্রাচীন বটগাছটিকে নিয়ে প্রচলিত আজব সব কথাবার্তা শোনা যায়। বটগাছের পাতা বা ডালপালা জ্বালানি হিসেবে কেউ যদি ব্যবহার করে তাহলে তাদের গায়ে জ্বর আসে। এ ছাড়াও কথিত আছে গাছের নিচে প্রসাব বা মলত্যাগ করলে তারা পড়েন নানা রকম অসুখে। তাই এই শোনা কথাগুলো এখনও মেনে চলেন এলাকার স্থানীয় লোকজন।

রাস্তা কাঁচা হওয়ায় অনেকটা অসুবিধায় পড়তে হয় গাছটি দেখতে আসা দর্শনার্থীদের। তাই দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে রাস্তা পাকাকরণসহ উন্নয়নমূলক কাজ করার দাবি স্থানীয়দের।

সময়ের বিবর্তনে বটগাছের ঐতিহ্য অনেকটা হারিয়ে গেলেও সিরাজগঞ্জের সরাইদহের চরপাড়া গ্রামের ভিন্ন চিত্র, তাই পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে বটগাছটির সৌন্দর্য বর্ধনে সংরক্ষণের দাবি সংশিষ্টদের।

এএমকে

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ