নোয়াখালী প্রতিনিধি
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ছয়টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের আঘাতে ভেঙে গেছে বেড়িবাঁধের অন্তত ১৩টি অংশ। বাঁধগুলো মেরামত করা না হলে আবারও বিপদে পড়বে এসব এলাকার বাসিন্দারা। এমন অবস্থায় ভাঙা অংশগুলো দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত তিন দিনে জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর ভেসে যাওয়ায় শুক্রবারও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে দ্বীপটির কয়েক হাজার বাসিন্দা। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে সরকারি সহায়তা। এদিকে গত বুধবার সন্ধ্যায় জোয়ারের পানিতে ভেসে যাওয়া শিশু লিমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে সুখচর ইউনিয়নের চর আমানউল্যা গ্রামের পাশের মেঘনা নদী থেকে লিমার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে সুখচর ইউনিয়নের চর আমানউল্যা গ্রামের পাশ্ববর্তী মেঘনা নদী থেকে স্থানীয় লোকজন লিমার লাশ উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট অতিরিক্ত জোয়ারে গত তিন দিন জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হরনী, চানন্দী, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, চরকিং, চরঈশ্বর ও নিঝুমদ্বীপের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে ইউনিয়নগুলোর বেড়িবাঁধের ১৩টি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রচন্ড জোয়ারের আঘাতে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে সোনাদিয়া ইউনিয়নের কোরালিয়া গ্রামে। এছাড়াও চরঈশ্বর ইউনিয়নের মাইচ্ছা মার্কেট, বাদশা মিয়া গ্রাম, তালুকদার গ্রাম, নলচিরা ইউনিয়নের ফরাজী গ্রাম, তুফানিয়া গ্রাম, সুখচর ইউনিয়নের চরআমান উল্যাহ গ্রাম, বউ বাজার, চেয়ারম্যান ঘাট, তমরদ্দির ইউনিয়নের খিলদিয়া, সোনাদিয়া ইউনিয়নের কোরালিয়া, হরনী ও চনন্দী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাশাপাশি কিছু ভাঙা অংশ মেরামতের কাজ করছেন স্থানীয় লোকজন। জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর হারিয়ে হাজার হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে খোলা আকাশের নিচে, উঁচু জায়গা, বেড়িবাঁধ ও বড় নৌকা এবং ট্রলারে। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, গৃহপালিত পশু, পুকুরের মাছ ও জমির ফসল। কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে এখনও পানি থাকায় রান্নাবান্না করতে পারছে না অনেক পরিবার।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে সরকারি ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গৃহহীনদের পুর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন জানান, হাতিয়ার বেড়িবাঁধের ১০টি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই বাঁধগুলো মেরামতে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি।
টিআর/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন