প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২, ০৪:১০ পিএম
শীতের সঙ্গে খেজুরের রসের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। শীতকালে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরগাছ থেকে পাওয়া যায় সুমিষ্ট রস। দিন দিন বেড়েই চলছে ঐতিহ্যবাহী এই রসের চাহিদা। এই শীত মৌসুমে খেজুরের রস বিক্রি করে অনেকেই সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন। তেমনই একজন নরসিংদী সদর উপজেলার কাঠাঁলিয়া ইউনিয়নের মৈষাদী গ্রামের আলী আকবর। তিনি ওই গ্রামের মৃত. গণি মিয়ার ছেলে।
মঙ্গলবার
(৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রস বিক্রেতা
৭২ বছরের বৃদ্ধ আলী আকবরের সঙ্গে
কথা হয়। তিনি জানান,
দিন দিন খেজুর গাছের
সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন
তেমন রস সংগ্রহ করা
যাচ্ছে না। দীর্ঘ ৩৬
বছর ধরে শীতকালে খেজুর
রস বিক্রি করে সংসার সুন্দরভাবে
চালাতে পারছেন তিনি। এ বছর সর্বোচ্চ মূল্যে
রস বিক্রি হচ্ছে। খেজুর গাছে কলস ঝুলানো
অবস্থায় রস পিয়াসুরা তা
নিয়ে যাচ্ছে। ভোরে
পাশের গ্রাম থেকে দুটি খেজুর
গাছ থেকে ৮ কেজি
রস আহরণ নিজ গ্রামে
যাওয়ার পথেই ক্রেতাদের অনুরোধে
বিক্রি করে দিতে হয়েছে।
আলী
আকবর আরও জানান, রস
দিয়ে গুড় তৈরি করেও
বিক্রি করেছেন তিনি। এখন রসের সংকট
থাকায় রস খেতে আসা
ক্রেতাদের চাহিদা মিঠাতে পারছেন না। খেজুর গাছের
রস দিয়ে পিঠেপুলি ও
খাঁটি গুড় তৈরি করতে
প্রতিদিন কেউনা কেউ রসের জন্য
অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখছেন।
শীতের শেষ মৌসুমেও বাড়িতে
এসে নগদ টাকা দিয়ে
যাচ্ছে ক্রেতারা।
তিনি জানান, শীতকাল ছাড়া গ্রামে গ্রামে ঘুরে নারিকেল গাছ সাটাই করে সংসার চালান। এ ছাড়া তিনি সরকারের বয়স্ক ভাতাও পাচ্ছেন। পরিবারে এক স্ত্রী ও দুই মেয়ে এবং তিন ছেলে রয়েছে। সন্তানদের মধ্যে ছেলে সংগ্রামের সময় জন্মগ্রহণ করেন। সবাই পৃথকভাবে আয় করে নিজ নিজ সংসারের হাল ধরেছেন। জীবনের সংগ্রামে তিনি নিম্ন পরিবারের হয়েও পরিবার পরিজন নিয়ে একজন সচ্ছল ব্যক্তি।
জানা যায়, খেজুরের রসের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি বিলুপ্ত হচ্ছে গ্রামের খেজুর গাছ। নতুন করে খেজুর গাছের চাষ গ্রামে তেমন দেখা যাচ্ছে না। গাছের অভাবে রস সংকটের ফলে চলমান শীত মৌসুমে প্রতি লিটার খেজুরের রস বিক্রি হচ্ছে একশ টাকা কেজি ধরে।
এএমকে/ডাকুয়া