প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২২, ০৯:৩৮ পিএম
মাঘের শীতে রংপুরে আজ শুক্রবার (৪ জানুয়ারি) ভোর রাত হতে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সূর্যের আলোর দেখা মেলেনি কোথাও। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও বাতাস বয়ে যাচ্ছে রংপুর জেলাসহ বিভাগের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে। শীতের প্রকোপ আর করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখীর সময় হঠাৎ এই বৃষ্টি আর বাতাস। এতে বিপন্ন হয়ে পড়েছে জনজীবন।
শুক্রবার
ভোর থেকে হঠাৎ করেই
মেঘলা আকাশ আর ঘন
কুয়াশায় ঢেকে যায় উত্তরের
আকাশ। কুয়াশা কাটিয়ে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি
বৃষ্টি। এতেই সকাল থেকে
সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। বৃষ্টির
সঙ্গে হিম ঠাণ্ডা বাতাসে
ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবীসহ
নিম্ন আয়ের মানুষজন। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, এই অবস্থা থাকবে
আগামীকালও।
এদিন
সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে
ছুটির দিনে বৃষ্টিতে রাস্তা
ঘাট যেন ফাঁকা। জরুরি
প্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে
আসা মানুষের মাথায় ছাতা আর শরীরে
উঠছে মোটা কাপড়। বৃষ্টি
আর বাতাসের সঙ্গে জরুরি প্রয়োজন সারতে একেবারে জুবুথুবু হয়ে অনেকটা পথ
চলছে মানুষজন।
নগরীর
আলম নগর এলাকায় ছাতা
নিয়ে বাইরে বের হওয়া খায়রুল
কবির অপূর্ব নামের এক যুবক বলেন,
‘ভোর থেকে বৃষ্টি আর
বাতাসে বাইরে বের হওয়া খুব
কষ্টকর, তারপরও বের হয়েছি বাজার
করতে।’
শাপলা
চত্বরে কথা হয় রবিউল
নামে এক পথযাত্রীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘বাইরে রিকশা-অটোভ্যান কিছুই নেই। কষ্ট করে হেঁটে
যাচ্ছি।’ অসময়ে এই বৃষ্টিতে পরিবারের অনেকে জ্বর-সর্দিতে ভুগছে
বলেও জানান তিনি।
খোঁজ
নিয়ে জানা গেছে, শহরের তুলনায় রংপুরের উপজেলা পর্যায়ের গ্রামাঞ্চলগুলোতে গবাদি পশু শিশু-বয়োবৃদ্ধদের
নিয়ে অনেকটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে চলমান এই
আবহাওয়ায়।
শুক্রবার
দেশের সর্বনিম্ন
তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ২
ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪
দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস,
দিনাজপুরে ১৩ দশমিক ৭
ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১৩ দশমিক ৩
ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া
অধিদফতর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিত অংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল
এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে রংপুর,
রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট,
খুলনা ও বরিশালের অনেক
জায়গায় এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের
কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী
দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি
বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। দেশের
কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে
পারে। এ ছাড়া আজ মধ্যরাত থেকে
সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে বলেও আবহাওয়া বার্তায়
জানা যায়।
রংপুর
আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান সিটি নিউজ ঢাকাকে
বলেন, ‘পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিত অংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল
এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টি ও
বাতাস হচ্ছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে ঠাণ্ডা বাতাস থাকবে এই অঞ্চলে। এটি
আজ এবং আগামীকাল পর্যন্ত
স্থায়ী থাকবে। এরপর ক্রমে ক্রমে
বাতাস আর হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি কমে আবহাওয়ার উন্নতি
হবে। তবে এরপর রাতে
কুয়াশা অনেকটা কমে আসলেও ঠাণ্ডার
পরিমাণটা আরও তীব্র হবে
উত্তরাঞ্চলে।
এএমকে/ডা