
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২, ০৯:০৯ পিএম
মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মহামারি
করোনার প্রভাব, বিচারক ও লজিস্টিক সংকটসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল। এর পরেও ২০২১ সালে ৫ হাজারের
বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
কোর্ট (মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত)। একই সঙ্গে
সাক্ষ্যগ্রহণেও রেকর্ড গড়েছেন এই আদালত।
তথ্যমতে,
২০২১ সালে মামলা দায়েরের
তুলনায় নিষ্পত্তির হার ১০৬.৮৭
শতাংশ। ম্যাজিস্ট্রেটদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আদালত ব্যবস্থাপনা
ছিল সুষ্ঠু। এ ছাড়া কর্মঘণ্টার সঠিক
ব্যবহার ও আইনের যথাযথ
প্রয়োগের ফলেই এ সাফল্য
এসেছে বলে আদালত-সংশ্লিষ্টরা
মনে করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের
বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে উত্থাপন করা চিফ জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া
গেছে। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হোসেন।
বার্ষিক
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১
সালে মোট কর্যদিবস ছিল
২৪৫ দিন। করোনাভাইরাসের কারণে
ওই বছরের ৫ এপ্রিল থেকে
১০ আগস্ট পর্যন্ত ৮৫ দিন বিচারিক
কার্যক্রম হয়নি। কার্যক্রম চলেছে ১৬০ কার্যদিবস। এর
মধ্যে ট্রেনিং, নির্বাচনী দায়িত্ব, নৈমিত্তিক ছুটি ছিল। তবে
বিচারিক কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না
হয় এ জন্য তাদের
জায়গায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অন্য ম্যাজিস্ট্রেটরা নিষ্ঠার
সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
বিচারক
সংকটের পাশাপাশি আদালতে অন্যান্য জনবলেও ঘাটতি ছিল। তারপরেও ২০২১
সালে ৫ হাজার ১৯৬টি
মামলা নিষ্পত্তি (বদলিসহ) করেন এই আদালত।
সাক্ষ্যগ্রহণের ক্ষেত্রেও সাফল্য দেখিয়েছেন। এ সময়ে সাক্ষী
পরীক্ষা হয়েছে ৭ হাজার ১৩৭টি।
২০২১
সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতে প্রারম্ভিক মামলা ছিল ৭ হাজার
৪৯টি। নতুন মামলা দায়ের
হয় ৪ হাজার ৮৬২টি।
মামলা নিষ্পত্তি (বদলিসহ) করা হয় ৫
হাজার ১৯৬টি এবং ওই বছর
৭ হাজার ১৩৭ জন সাক্ষীর
সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। একই
বছর আদালতে বিচারাধীন মামলা ৬ হাজার ৭১৫টি।
মামলা কমেছে ৩৩৪টি।
বার্ষিক
প্রতিবেদন উপস্থাপন শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হোসেন
বলেন, ‘বিগত বছরজুড়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক
ম্যাজিস্ট্রেট এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকলে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা
যেত। এই অধিকসংখ্যক মামলা
নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটদের সুষ্ঠু আদালত ব্যবস্থাপনা, কর্মঘণ্টার সঠিক ব্যবহার ও
আইনের যথাযথ প্রয়োগ মূল ভূমিকা রেখেছে।
আইনজীবী ও আদালত-সংশ্লিষ্টরা
মামলা নিষ্পত্তিতে সহযোগিতা করেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সুবিচার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়
কাজ করছি। এ ধারা অব্যাহত
থাকবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এই সাফল্যের বিষয়ে
জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির
সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হামিদুল হক বলেন, ‘বিচারিক
কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে এই
আদালত বেশ আগ্রহী। এ
জন্য আইনজীবীরাও আদালতে সাক্ষী উপস্থিত করেছেন। বিচারকেরাও নিরলস কাজ করেছেন। সর্বোপরি
এই আদালতের বিচারক, আইনজীবী এবং আইনজীবী সহকারী
ও আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একান্ত সহযোগিতায় গেল বছরে এতগুলো
মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে।
এএমকে/ডা