প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৪, ০৮:৪১ এএম
বিস্তর ভোটের ফারাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নেন কমলা হ্যারিস। লিঙ্গ বৈষম্য, সময় স্বল্পতা নাকি জনপ্রিয়তার অভাব, ঠিক কোন কারণে হোয়াইট হাউজের প্রথম নারী
ইতিহাস পরিবর্তন করে এবার হয়তো হোয়াইট হাউজের গদিতে এক নারী প্রেসিডেন্টকে দেখা যাবে এমন আশায় ছিল বিশ্বের বহু মানুষ। তবে, গেল ৫ নভেম্বর সেই আশা ভঙ্গ করে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকানদের জয় এবং ডেমোক্র্যাটদের পরাজয়ের পেছনে কোন বিষয়গুলো কাজ করেছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সামনে আনছেন বিভিন্ন মতামত।
এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্দ্রা গিলেসপির মতে, বাইডেন প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা হারানো, জনপ্রিয়তার অভাব, প্রচারণায় সময় স্বল্পতা এবং নারী প্রেসিডেন্ট নিয়ে মার্কিনদের মধ্যেআস্থার অভাব, এ বিষয়গুলোই কমলা হ্যারিসের পরাজয়ের মূল কারণ।
তার মতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো এক দফায় প্রেসিডেন্ট থাকা নেতার বিপক্ষে লড়াই করার জন্য যথেষ্ট সময় পাননি কমলা। এই কম সময়েও তুলনামূলকভাবে স্বল্প পরিচিত এই ডেমোক্র্যাট নেত্রী যতটুকু পথ পাড়ি দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আন্দ্রা গিলেসপি বলেন, জো বাইডেনের মতো একজন প্রতিষ্ঠিত ডেমোক্র্যাট নেতার জায়গা নেয়া এবং নিজের জায়গা তৈরি করা, তাও আবার মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে। এটি বেশ কঠিন একটি কাজ ছিল।
আগে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকাও ট্রাম্পের পুনরায় ক্ষমতায় আসার একটি কারণ। ভোটারদের কাছে কমলার নেতৃত্বের বিষয়টি পুরোপুরি নতুন। এ অবস্থায় পরিচিত শাসকের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়াই তাদের কাছে সমীচিন মনে হয়েছে। এছাড়া, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে যেটুকু জনপ্রিয়তা প্রয়োজন তার তুলনায় কমলা হ্যারিস বেশ নতুন একটি নাম বলেও মনে করেন অধ্যাপক গিলেসপি।
এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় এই অধ্যাপক আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় কমলা হ্যারিস একটা অপরিচিত নাম। তাই, তার সরকার কেমন হবে এ বিষয়ে মানুষের কোনো ধারণা নেই। তারা শুধু জানতো যে বাইডেন প্রশাসনের মতো একটি অ-জনপ্রিয় সরকারের সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে আছে।
এছাড়া, লিঙ্গ বৈষম্যও একটি কারণ হতে পারে বলে ধারণা তার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারী ক্ষমতায় এলেও মার্কিন ভোটারদের অনেকেই মনে করেন বিশ্ব রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ক্ষমতা এবং মনোবল প্রয়োজন, তা একজন নারীর নেই।
এ কারণেও অনেকের কাছেই কমলার তুলনায় ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। তবে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো জরিপ না থাকায়, শক্তভাবে কোনো মন্তব্য করেননি অধ্যাপক।
এছাড়া, বাইডেন প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় কমলা হ্যারিসের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছেন সাধারণ জনগণ। অপরদিকে, ট্রাম্প দেশের অর্থনীতির হাল শক্ত হাতে ধরবেন বলে আশা মার্কিনদের।
অনেকেই আবার বর্ণবৈষম্যকেও কমলার পরাজয়ের একটি কারণ বলে মনে করছেন। তবে এ বিষয়ে আন্দ্রা গিলেসপির মতামত ভিন্ন। তার মতে জরিপ অনুযায়ী এশিয়ান আমেরিকান এবং হিস্পানিকদের বড় একটি অংশ কমলার পরিবর্তে অন্য প্রার্থীকে বেশি ভোট দিয়েছে। বর্ণ এবং লিঙ্গবৈষম্যের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে আরও জরিপ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন মার্কিন এ বিশ্লেষক।