• ঢাকা বুধবার
    ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

শাবিপ্রবি শিক্ষককে ফেনসিডিল দিতে গিয়ে আটক ২

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২, ০৭:৩৭ এএম

শাবিপ্রবি শিক্ষককে ফেনসিডিল দিতে গিয়ে আটক ২

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা৷ সেই আন্দোলনের মধ্যেই উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ’  এক শিক্ষককে ফেনসিডিল দিতে গিয়ে আটক হয়েছেন নিরাপত্তাকর্মীসহ দুইজন।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে শাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এক যুবক উপাচার্যের বাসভবনের দিকে ঢুকছিলেন। তিনি এখানকার আউট সোর্সিংয়ের সিকিউরিটি গার্ড। শিক্ষার্থীরা তাকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন তার হাতে একটি বোতল পাওয়া যায়। ওই বোতলে ফেনসিডিল লেখা। আটকের পর আমাদের কাছে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে আটক অপর ব্যক্তির নাম জানাতে পারেননি পুলিশের এ কর্মকর্তা।’

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আরও বলেন, ‘আটকের পর সে একটি নাম বলেছে (অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদার)। যার কথা বলেছে তার ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনের ১১তম দিনের (সোমবার) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সিকিউরিটি চেকিংবসিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী, পুলিশ ও সাংবাদিকের বাইরে বহিরাগত কাউকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিচ্ছেন না। তৈরি করা হয়েছে মানবদেয়াল।

এমন পরিস্থিতিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনের চেকিং পয়েন্টে মাদকদ্রব্যসহ ধরা পড়েন ওই যুবক। তিনি শাবির গেস্ট হাউসে পার্ট-টাইম সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকরি করেন বলে জানিয়েছেন। তার নাম জাহিদুর রহমান।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে জাহিদুর রহমান নামের ওই সিকিরিটি গার্ডকে একটি ওষুধের মোড়কের ভেতরে ফেনসিডিলের বোতলসহ ধরেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় সিকিরিটি গার্ড তাদের জানান, এক শিক্ষক অসুস্থতার কথা বলে ওষুধ নিয়ে আসতে বলেন তাকে। কিন্তু ওই শিক্ষকের নাম তিনি জানেন না বলে শিক্ষার্থীদের জানান।

সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সিকিউরিটি গার্ড জানান, রাত ১১টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে আসলে ওই শিক্ষকের দেখানো এক লোক জাহিদুরের কাছে একটি প্যাকেট দেন। সেই প্যাকেটের ভেতর একটি ফেনসিডিলের বোতল ছিল। তিনি যমুনা নামক একটি সিকিউরিটি কোম্পানির অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় গার্ডের চাকরি করেন বলে জানান। আটকের সময় তার কাছে একটি আইডি কার্ডও পাওয়া যায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জাহিদুরকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদারকে একাধিকবার কল-ম্যাসেজ দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের বাসভবনের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজ। আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে ওই গেস্ট হাউজে অভিযুক্ত শিক্ষক আটকা পড়েন। সেখানে গত কয়েকদিন ধরে অবস্থান করছিলেন ড. মাজহারুল হাসান। উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ হিসেবে তিনি পরিচিত। তিনি মাদক গ্রহণ করেন বলে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ আছে।

আন্দোলনরতদের অন্যতম মুখপাত্র মীর রানা বলেন, ‘উপাচার্যের নিজ বাসভবনের মেইন গেটের সিকিউরিটি গার্ডই যখন ফেনসিডিল বাসায় নিতে গিয়ে ধরা পড়ে, তখন পুরো ক্যাম্পাসে মাদক চোরাচালানের দায়ভারও তাকেই নিতে হবে। আর যে শিক্ষকের (অধ্যাপক ড. মাজহারুল হাসান মজুমদার) জন্য এ ফেনসিডিল নিচ্ছিল সিকিউরিটি গার্ড, সে শিক্ষক ক্যাম্পাসে উপাচার্যের খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

জেডআই/ডা

আর্কাইভ