• ঢাকা শনিবার
    ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১

সড়ক না পেয়ে ‘এতিম’ ৩১ লাখ টাকার ব্রিজ!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২২, ০২:২০ এএম

সড়ক না পেয়ে ‘এতিম’ ৩১ লাখ টাকার ব্রিজ!

ফজলুল করিম, কুড়িগ্রাম

নয়নাভিরাম রঙের ছোঁয়ায় জ্বলজ্বল করে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ব্রিজ। নাম সিতাইঝাড় ব্রিজ। দেখতে চকচকে। ব্রিজটি গ্রামের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। তবে গ্রামবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। কারণ ব্রিজটিতে যুক্ত নেই সংযোগ সড়ক। তাই কোনো কাজে না আসায় ব্রিজটি গ্রামবাসীর জন্য আশীর্বাদ নয়, ভোগান্তির কারণ।

অথচ সংযোগ সড়ক থাকলে নয়নাভিরাম সিতাইঝাড় ব্রিজের ওপর দিয়ে তিন ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচল করতে পারত।

প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় গ্রামের হাদের গোয়ালের বাড়ির পেছনে সাড়ে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় একটি ব্রিজ। ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ার আগেই বন্যার পানিতে দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কুড়িগ্রাম জেলা সদরের মোগলবাসা, পাঁচগাছি বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষের চলাচলের জন্য নির্মিত হয় ১৮ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ব্রিজ। ব্রিজ নির্মাণ হওয়ায় তিন ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসে। আশপাশে গড়ে ওঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাটবাজারে যাতায়াতেরও সুবিধা হবে বলে ব্রিজটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রতীক্ষায় থাকে লোকজন। কিন্তু সেই আশা আর স্বপ্নে ধস নামায় ২০১৮ সালের বন্যা। উদ্বোধনের আগেই বন্যার পানির স্রোতে ব্রিজটির দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। ফলে চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয় ওঠে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে এলাকাবাসী। তাই বাঁশের সাঁকো তৈরি করলেও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় গ্রামবাসীর। ব্রিজ নির্মাণের তিন বছর পার হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ক্ষোভ এলাকাবাসীর।

আব্দুল লতিফ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে কমিউনিটি ক্লিনিক, নয়ারহাট বাজারমাদরাসা নয়ারহাট উচ্চবিদ্যালয়। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। শুষ্ক মৌসুমে ব্রিজের নিচ দিয়ে যাতায়াতে ফসলি জমি নষ্ট হয়। আর বর্ষায় হয় চরম দুর্ভোগ। বিকল্প সড়কও নেই। তাই তিন-চার কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। অনেক সাধনার পর ব্রিজ হলো। কিন্তু ব্রিজে এখনও পা রাখতে পারলাম না।

শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলে, ‘বন্যার সময় স্কুলে যেতে অনেক সময় সাঁকো থেকে পিছলে পানিতে পড়ে যাই। জামাকাপড়, বইখাতা ভিজে যায়। সেদিন আর স্কুলে যাওয়া হয় না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য লোকমান আলী বলেন, ‘ব্রিজ হওয়ার পরই বন্যায় সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। গত তিন বছরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দফতরে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করা হয়েছে। ওরা এসে স্টিমেট করে গেলেও আজ পর্যন্ত টেন্ডার বা কাজের কিছুই দেখছি না।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খন্দকার মো. ফিজানুর রহমান বলেন, সিতাইঝাড় ব্রিজের বিষয়ে অবগত আছি। সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেডখান/এএমকে/এম. জামান

 

আর্কাইভ