প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২২, ০৮:৪৯ পিএম
জিয়াউল গনি সেলিম, রাজশাহী ব্যুরো
স্বাস্থ্য অধিদফতরের জরিপে করোনা সতর্কতায় রাজশাহী এখন হলুদ জোনে।
কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের আগ্রহ খুব কমই চোখে
পড়ছে। বেশির ভাগ মানুষই ঘোরাফেরা করছেন ফ্রিস্টাইলে। ফলে সবখানেই স্বাস্থ্যবিধি
উপেক্ষিত।
শুক্রবার
(১৪ জানুয়ারি) ছিল ছুটির দিন।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) আড়মোড়া
ভেঙে ঘর থেকে বেরিয়েছে
মানুষ। ফলে রাস্তাঘাট,
বিপণিবিতান সবখানেই মানুষের ভিড়। কিন্তু বেশির
ভাগ মানুষের মুখেই মাস্ক নেই। অনেকেই মাস্ক
মুখে না দিয়ে থুতনিতে
সাঁটিয়ে রেখেছেন। তাদের অজুহাত- মাস্ক পরলে শ্বাস নিতে
সমস্যা হয়। কিন্তু আজ
থেকে মাস্ক না পরলে জরিমানা
করা হবে। তাই থুতনিতে
কোনোভাবে মাস্ক ঝুলিয়ে নিয়ে বাইরে বের
হয়েছেন।
শুক্রবার
জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরীর বিভিন্ন এলাকার অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় মাস্ক
না পরায় দুজনকে অর্থদণ্ড
দেয়া হয়।
শনিবার
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট
জেলা হাসপাতালে ডায়ালাইসিস ইউনিট ও সিটিস্ক্যান মেশিন
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সতর্ক করে বলেছেন, ‘দেশে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান ১১
দফা বিধিনিষেধ অমান্য করলে লকডাউন দেয়া
হতে পারে। ভারতের মতো বাংলাদেশেও ওমিক্রনের
কমিউনিটি ট্রান্সমিশন (সামাজিক সংক্রমণ) শুরু হয়েছে। কিন্তু
কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তেমন সাড়া নেই।
করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর এত মৃত্যু
আক্রান্তের পরও বেশির ভাগ মানুষই
এখনও উদাসীন।
এদিকে,
রাজশাহীতে গেল ২৪ ঘণ্টায়
করোনা উপসর্গে এক বৃদ্ধা মারা
গেছেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে
শনিবার সকাল ৯টার মধ্যের
যেকোনো এক সময়ে হাসপাতালের ২৯/৩০ নম্বর
ওয়ার্ডে তিনি মারা যান।
রামেক
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত
করেছেন। তিনি জানান, রামেক
করোনা ইউনিটে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত
রোগী ভর্তি ছিলেন ৩১ জন। এক দিন
আগেও এই সংখ্যা ছিল
৩২ জন। বর্তমানে রাজশাহীর
২০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২
জন, নওগাঁর ৩ জন, নাটোরের
৩ জন এবং পাবনার
৩ জন রোগী হাসপাতালে
ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতালে
করোনা নিয়ে ভর্তি রয়েছেন
১১ জন। করোনা উপসর্গ
নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৩ জন। এই
এক দিনে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন
একজন রোগী।
তবে
গত শুক্রবার ছুটির দিনে রামেক হাসপাতাল
ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়নি। একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল
কলেজ (রামেক) ল্যাবে ১৫০ জনের নমুনা
পরীক্ষা হয়েছে। তাতে করোনা ধরা
পড়েছে ১৮ জনের। তারা
রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। পরীক্ষার অনুপাতে এই জেলায় করোনা
শনাক্তের হার ১২ শতাংশ।
রাজশাহী
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, এখনও রাজশাহী বিভাগে
ওমিক্রন শনাক্ত হয়নি। তবে জানুয়ারির শুরু
থেকে করোনার শনাক্ত বাড়ছে। পরীক্ষা কম হওয়ার পরও
শনাক্তের হার বেশি। এরই
মধ্যে রাজশাহী ও নাটোর এ দুই জেলাকে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে হলুদ জোনের
(মাঝারি ঝুঁকি) আওতায় আনা হয়েছে। কঠোরভাবে
স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যেকোনো সময় এ সংক্রমণ
আরও বেড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা
রয়েছে। আর বছরের শুরুতে
সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে,
তার মানে এটা করোনার
নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ হওয়ারই আশঙ্কা বেশি।
নূর/এম. জামান