প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২, ০৩:৩১ এএম
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ঘরোয়া সালিসি বৈঠক শেষে সোমা আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূ শরীরে আগুন জ্বালিয়ে
আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১২ জানুয়ারি) ভোররাতে ঢাকার একটি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান স্বজনেরা।
উপজেলার বোয়ালী পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি ওই এলাকার এরশাদ মিয়ার স্ত্রী। আত্মহত্যা নয়, আগুন জ্বালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান মেয়ের মা পারভীন আক্তার। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানায় পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, পারিবারিক বনাবনি না হওয়ায় গত শনিবার দুপুরে এরশাদের বাড়িতে একটি সালিসি বৈঠক হয়। তার কিছুক্ষণ পর বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে সোমা নিজেই শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এ ঘটনার চার দিন পর চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
ওই এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটা নিজেই শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি তখন ওই বাড়ির রান্নাঘরের পাশে ছিলাম। সালিসি বৈঠকের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন- আমি ঢাকায় যাচ্ছি। সন্ধ্যায় সব বলব বলে ফোন কেটে দেয়।
মেয়ের মা পারভীন আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েকে আগুনে পুড়ে মরার সময় মেয়ে কাইন্দ্যা কাইন্দ্যা কইছে আমারে বাঁচাও, কেউ এক কলসি পানি নিয়ে আসো। কিন্তু কেউ পানি নিয়ে এগিয়ে আসে নাই। এর আগেও আমার মেয়েকে লোহার প্যারাক (রড) দিয়ে সেঁক দিত। কত কইছি তোরে নিয়া যামুগা, আমার ম্যায়ায় (মেয়ে) কইছে একটা বাচ্চা হইছে আমি এখান থেকে যামুনা। কিন্তু পাষাণ স্বামী, শ্বশুর মিলে আমার মেয়েকে আগুন ধরিয়ে পুইড়া মারছে। আমি এর বিচার চাই।’
মেয়ের মা পারভীন আক্তার আরও জানান, প্রায় চার বছর আগে মির্জাপুর উপজেলার গয়রামপুর গ্রামের নইমুদ্দিনের মেয়ে সোমা আক্তারের সঙ্গে সখীপুর উপজেলার বোয়ালী পশ্চিমপাড়া এলাকার সোমেশ আলীর ছেলে এরশাদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। এর আগেও এরশাদ একটি বিয়ে করেছিলেন। আর এ ঘটনা আমরা বিয়ের পরে জানি। সেই ঘরে একটি ১৫ বছরের মেয়ে আছে। সেই সংসার নিয়েও মামলা চলছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে সাইদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আগুনে পুড়ে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি, কিন্তু কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি।’
জেডআই/এম. জামান