প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২, ০৫:০৭ এএম
এসএসসি পাসের পর কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্নই ছিল ১৭ বছরের কুলসুম খাতুনের। এবার এসএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু দিনমজুর বাবা কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারেননি; সেই অভিমান আর ক্ষোভে আত্মহত্যা করে জীবনের সব স্বপ্নকেই মুক্তি দিলো কুলসুম।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিজঘরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে। কুলসুম রাজশাহী দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর খুলুপাড়া গ্রামের রোহাব মণ্ডলের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, কুলসুমের পরিবারে নিজের মা ছাড়াও সৎ মা আছে। সে পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী ছিল। তবে আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে সুযোগ সুবিধা তেমন পেত না। সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সে ৪ দশমিক ৮৩ পেয়েছিল। পরীক্ষায় পাসের পর পর কুলসুমের ইচ্ছে ছিল সহপাঠীদের সঙ্গে কলেজে ভর্তি হওয়ার। সে ইচ্ছের কথা সহপাঠীদেরও জানিয়েছিল।
শনিবার বিকেলে কুলসুম তার বাবা-মায়ের কাছে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য টাকা চায়। কিন্তু অভাবের সংসারে কুলসুমের কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো টাকা ছিল না পরিবারের কাছে। তাই টাকা দিতে পারবে না বলে জানায় কুলসুমের বাবা-মা। বাবা-মায়ের এমন সিদ্ধান্ত কিছুতেই মানতে পারছিল না কুলসুম। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিমানে নিজঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
দেবীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নূরুল হুদা রনি বলেন, ‘কুলসুম পড়ালেখায় ভালো ছিল। তার বাবা খুবই দরিদ্র। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো টাকা জোগাড় করতে পারেনি, এ কথা আমরা জানতাম না। এভাবে আত্মহনন মানা যায় না।’
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাশমত আলী বলেন, ‘মেয়েটার কলেজে ভর্তি হওয়ার টাকা ও বই কিনে দিতে চায়নি বাবা-মা। এতে অভিমান নিয়ে সে আত্মহত্যা করে। পরিবার ও এলাকাবাসীর কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।’
জেডআই/এম. জামান