প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২২, ১১:১৩ পিএম
রংপুরের বদরগঞ্জে ঈশিতা জাহান (২৫) নামে এক
গৃহবধূকে যৌতুকের দাবিতে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্বামী
মনিম সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার
(৮ জানুয়ারি) বিকেলে মনিম সরকারকে গ্রেফতারের
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান।
মুনিম
সরকার উপজেলার বিষ্ণুপুর কালিগঞ্জ এলাকার তোইয়ব আলী মাস্টারের ছেলে।
তিনি স্ত্রী ঈশিতা জাহানকে নিয়ে কালিগঞ্জে নিজ
বাড়িতে থাকতেন।
পুলিশ
ও গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায়
৬ বছর আগে বিষ্ণুপুর
কালিগঞ্জ গ্রামের মুনিম সরকার সঙ্গে পাগলাপীর গঞ্জিপুর শাহাপাড়া গ্রামের ঈশিতা জাহানের প্রেম করে বিয়ে হয়।
পরে প্রেমের বিয়ে উভয় পরিবার মেনে নেয়। বিয়ের
এক বছর পর থেকে
প্রায় প্রতি রাতেই মুনিম নেশাগ্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে
যৌতুকের টাকার জন্য ঈশিতাকে মারধর
করতেন। ঈশিতার বাবা বিয়ের পরে
দুই দফায় দুই লাখ টাকার
যৌতুক দেন। আর এক
লাখ টাকা দাবি মুনিমের।
এ নিয়ে দুজনের মধ্যে
প্রায়ই ঝগড়া হতো। তিন
বছর সংসার করার পর ২০১৯
সালে ঈশিতা তার নিজের বাড়িতে
চলে যায় এবং ডিভোর্স
হয়।
২০২০
সালের শেষে আবারও তাদের
বিয়ে হয়। গত শুক্রবার
সন্ধ্যার দিকে যৌতুকের আর
এক লাখ টাকার জন্য
স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পেটাতে
থাকেন মনিম। একপর্যায়ে ঈশিতা অচেতন হয়ে গেলে মুনিম
নিজেই তাকে বদরগঞ্জ উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত
চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা
করেন। পরে বদরগঞ্জ থানায়
খবর দিলে হাসপাতাল থেকে মুনিমকে আটক
করে পুলিশ।
হাসপাতালের
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমা বেগম বলেন, ‘ওই
গৃহবধূর গলা ও পিঠে
আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত
কারণ জানা যাবে।’
গৃহবধূর
পিতা ইলিয়াস শাহ অভিযোগ করে
বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার
ছোট মেয়ে ঈশিতা জাহানকে নেশা করে মারধর
করত জামাতা মুনিম। এ কারণে তাদের
ডিভোর্স হয়। ডিভোর্সের এক
বছর পর ফের তাদের
বিয়ে হয়। এরপর মনিম
টাকার জন্য আমার মেয়ের
ওপর আবারও অত্যাচার করে। মেয়ে আমাকে
ফোন দিয়ে প্রায়ই এসব বলত। শুক্রবার
সন্ধ্যায় একইভাবে আমার মেয়েকে যৌতুকের
এক লাখ টাকার জন্য
পিটিয়ে হত্যা করে। সন্ধ্যায় মুনিম
আমার বাড়িতে ফোন দিয়ে বলে
ঈশিতা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা
করেছে।’
বদরগঞ্জ
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর
রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযুক্ত
মুনিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গৃহবধূর
লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো
হয়েছে।’
নূর/ডা