প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২২, ১০:০২ পিএম
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দাদার লাঠির আঘাতে নাতি মো. রিফাত
মিয়ার (১৩) মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ইরতা পূর্বপাড়া গ্রামে।
নিহত রিফাত ওই গ্রামের মো.
রেজাউল মিয়ার ছেলে। সে সহবতপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এলাকাবাসী
ও পুলিশ জানায়, বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে
সহবতপুর বাজার থেকে রিফাতের বাবা
বড় একটি পাঙ্গাশ মাছ
কিনে বাড়ি আনেন। তখন রেজাউলের স্ত্রী
বলে, এত বড় মাছ
কিনে আনলা দেইখো এটা
নিয়ে কথা সৃষ্টি হবে।
পাশের ঘর থেকে রিফাতের
ছোট চাচি এই কথা
শুনে শ্বশুর রাজ্জাকের কাছে
বলে দেয়। এতে রিফাতের
দাদা রাজ্জাক মিয়ার (৬৫) মধ্যে ক্ষোভের
সৃষ্টি হয়। রাজ্জাক মিয়া
তার ছেলে রেজাউলের মাছ
কিনে আনার বিষয়ে প্রতিবাদ
করে। তখন রেজাউল তার
স্ত্রীকে বলে, বাবাকে
মাছ দেয়ার জন্য। এতে রাজ্জাক মিয়া
(বাবা) আরও ক্ষিপ্ত হয়ে
যায়। রাজ্জাক মিয়া ও তার
স্ত্রী এবং ছোট ছেলের বউ মিলে রেজাউল, ছেলে
রিফাত ও স্ত্রীকে মারধর
করে। এতে
রেজাউল ও রিফাত মাথায়
গুরুতর আঘাত পায়। বিকেলে
এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে নাগরপুর স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। রাত অনুমানিক ১টার
দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় রিফাত মারা যায়।
নাগরপুর
থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
থেকে রিফাতের মরদেহ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর
হাসাপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায়
মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নাগরপুর
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন,
‘বুধবার বিকেল ৩টার সময় রিফাত
ও তার বাবা রেজাউল
মাথায় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে এলে তাদের ভর্তি করা হয়। রিফাতের
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার
জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করি। রিফাতের আত্মীয়স্বজন
তাকে টাঙ্গাইল না নিয়ে ৫টার
দিকে আবার হাসপাতালে নিয়ে
আসে। এ সময়ের মধ্যে
রিফাত বমিসহ মাথাব্যথা চোখে
ঝাপসা দেখেছে বলে জানান। তখন
আবারও রিফাতকে দ্রুত টাঙ্গাইল নিতে বলা হয়।
কিন্তু তারা না নেয়ায়
পরে অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসা দেয়া
হয়। রাত ১টার দিকে
রিফাত মারা যায়।’
নিহত
রিফাতের বাবা রেজাউল বলেন,
‘আমি ঢাকায় একটি আড়তে কাজ
করি। ছুটি নিয়ে বাড়িতে
আসি। বুধবার বিকেলে স্থানীয় সহবতপুর বাজার থেকে একটি পাঙ্গাশ
মাছ কিনে আনি। আমার
বাবা, মা ও ছোট
ভাইয়ের স্ত্রী মাছকে কেন্দ্র করে আমার সঙ্গে
কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমাদের মারধর করে। এতে আমার
ছেলে রিফাতের মাথায় লাঠি দ্বারা আঘাত
করলে সে গুরুতর আহত
হয়। ওই রাতেই রিফাত মারা যায়।’
এ
বিষয়ে নাগরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম
বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে
ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহতের মরদেহ
উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
নূর/এম. জামান