প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২১, ০৩:২৪ এএম
কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরে মাসকলাই চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন চাষিরা। কম খরচ ও অল্প
পরিশ্রমে ডাল জাতীয় এ অর্থকরী ফসল চাষ করে আর্থিক সচ্ছলতায় ফিরছেন তারা। ফলন
ভালো হওয়ায় মাড়াই শেষে ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, কুষ্টিয়া জেলায়
চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ২৫৬ হেক্টর জমিতে মাসকলাই চাষ হয়েছে। এরমধ্যে পদ্মা নদীবিধৌত
দৌলতপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা। মাসকলাইয়ের ফলন হচ্ছে ২-৩ মণ হারে। বিনা পরিশ্রমে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে খরচ বাদে
প্রায় ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রয় করে চাষিদের লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ গ্রামের মাসকলাই চাষি আব্দুল
জাব্বার জানান, চলতি বছর পদ্মার চরে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে
মাসকলাই চাষ করা হয়েছে। খরচ হয়েছিল মাত্র ৭ হাজার টাকার মতো। ৫ বিঘা জমিতে ১৫ মণ
কালাই পেয়েছি।
তিনি আরও জানান, অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে এবং কম খরচে অন্যান্য
ফসল থেকে এমন আয় হওয়া সম্ভব না।
একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্বল্পকালীন সময়ে
ডাল জাতীয় অর্থকরী ফসল হিসেবে কলাই চাষ করে বেশ লাভবান হাওয়া যায়। এ ছাড়া চলতি
মৌসুমে কলাইয়ের ভালো ফলন হয়েছে। একই সঙ্গে বাজারে এর চাহিদা এবং দাম ভালো পাওয়া
যাচ্ছে। এমন বাজার দর থাকলে আগামীতে কলাই চাষে আরও বেশি আগ্রহী হবে চাষিরা।
এদিকে চাষিদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে মাসকলাই ক্রয় করে সেটি পাইকাররা ৩
হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রয় করছেন। এতে করে চাষিদের পাশাপাশি খুচরা
ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন। তবে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি কলাই এখন বিক্রয় হচ্ছে
৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শের পাশাপাশি
বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আধুনিক ও উচ্চ ফলনশীল জাতের মাসকলাই বীজ সরবরাহ ও
প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেয়ায় এ বছর মাসকলাই চাষে ভালো ফলন হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অনাবাদি পদ্মার চরে অর্থকরী ফসল মাসকলাই চাষ
বৃদ্ধি পেলে দেশের ডালের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি সম্ভব হবে বলে
আশা করি।