প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২১, ০৬:০৮ পিএম
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন ভাই। তারা নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়ে
পড়েছেন। সহদোরদের এমন বিরল ভোটযুদ্ধ এলাকায় ভোটারদের মনে আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে।
নির্বাচন করা তিন ভাই হলেন ওই এলাকার মৃত তসির উদ্দিনের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে একরামুল হক, মেজ ছেলে মোতালেব হোসেন ও অপরজন শহিদুল হক। শহিদুল আনারস, মোতালেব ঘোড়া ও একরামুল মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে আছেন।
একরামুল তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় ও সাবেক চেয়ারম্যান। শহিদুল তিনজনের মধ্যে ছোট এবং ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান। একরামুল ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। শহিদুল ২০০৩ সাল থেকে এই দায়িত্ব পালন করছেন। তবে দুই ভাইয়ের সঙ্গে মেজো ভাই মোতালেব হোসেনও প্রার্থী হয়েছেন। গত মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়েছেন তিনি। অসুস্থ শরীর নিয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাচ্ছেন।
কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয় প্রার্থী থাকলেও ভোটারদের আড্ডার আলোচনায় রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী আপন তিন ভাই। তারা একই পরিবারের হলেও ভোটযুদ্ধে কেউ কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলেছেন না। এতে তাদের নিয়ে চলছে সমালোচনাও।
ভোটাররা বলছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জের ধরে এবারই প্রথম একসঙ্গে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন তিন ভাই। নির্বাচনী প্রচারে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন।
আরিফুল মিয়া নামে এক ভোটার বলেন, ‘ভোট আসছে। তিন ভাই বাড়িত আসি ভোট নিতে আসছেন। একে অপরের দোষ ধরছেন। একটা ভোট ভেবেচিন্তে দিবো।’
আরেক ভোটার রউফ হোসেন বলেন, ‘তিন ভাইকে নিয়ে ভোটাররা চিন্তিত। তারা নিজেরা যেভাবে একে অপরের সমালোচনা করে ভোট চাইছেন, এতে গ্রামের মানুষ হাটে বাজারে, চায়ের দোকানে বসে হাসাহাসি করছেন।’
সাবেক চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, ‘আমার ছোটভাই শহিদুল চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকেও এলাকার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই ভোটারদের অনুরোধে আমি প্রার্থী হয়েছি।’
মেজো ভাই মোতালেব অভিযোগ করে বলেন, ‘ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি করেছে। চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়নে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ভোটারদের অনুরোধে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জয়ী হব ইনশা আল্লাহ।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদুল বলেন, ‘মানুষের জন্য আমি যথেষ্ট কাজ করছি। এলাকায় উন্নয়নও করেছি। মানুষ আমাকে ভালোবাসে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। বড় দুই ভাই ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। ভোটারেরা আমাকে নিরাশ করবেন না।’
রংপুর জেলা নির্বাচন অফিসার মো. ফরহাদ হোসেন জানান, বদরগঞ্জের একটি ইউনিয়নে আপন তিন ভাই চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন এবং তিন ভাইয়ের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগও রয়েছে। তবে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, চতুর্থ ধাপে বদরগঞ্জের ১০ ইউপিতে আগামী ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে ৫১, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৪১ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেডআই/এম. জামান