প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২১, ০১:১২ এএম
পৌষ-মাঘ
শীতকাল। পৌষের এখনও দুই দিন বাকি। এরই মধ্যে প্রকৃতিকে জড়োসড়ো করতে শীত জেঁকে বসেছে
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে। বেশ কয়েকদিন ধরে সকাল আর দিন গড়িয়ে বিকেল থেকে কুয়াশার
দেখা মিললেও ঠাণ্ডার তীব্রতা খুব বেশি অনুভূত হয়নি।
অনান্য দিনে
কুয়াশার সঙ্গে মৃদু হিমেল হাওয়া বয়ে চললেও বুধবার শীতের বৈরী আচরণে কাবু হয়ে পড়েছে
এ অঞ্চলের জনপদ। সকাল গড়িয়ে প্রায় দুপুর হলেও মিলছে না সূর্যের দেখা। বিপাকে পড়েছে
খেটে খাওয়া মানুষজন। এতে করে উত্তরের এ জেলায় ছিন্নমূল মানুষের ভোগান্তি ক্রমে বেড়েই চলেছে। তবে শীত মোকাবিলায় জনভোগান্তি সহনীয় মাত্রায় রাখতে সরকারের সকল
প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার (কৃষি ও সিনপটিক) সূত্র জানায়, জেলায় গত কয়েকদিন ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ২০ ডিসেম্বরের পর জেলায় একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার।
এদিকে শীতের
তীব্রতা বাড়ায় কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। সামর্থবানদের চাহিদা থাকায় বৈদ্যুতিক
দোকানগুলোতে গ্রিজার আর ইলেকট্রিক কেটলির বিক্রিও বেড়েছে। তবে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন
কৃষক ও দৈনিক খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে আসছে বোরো মৌসুমে মজুরি বিক্রি
করে রোজগারের সম্ভাবনায় শীতের তীব্রতা তাদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে।
উলিপুর উপজেলার
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের সীমান্তবর্তী গ্রাম মশালের চর। ওই গ্রামের
বাসিন্দা দিনমজুর হামিদুল ইসলাম। বন্যা মোকাবিলা করে পরিবার নিয়ে টিকে থাকা
হামিদুলের এবারের চিন্তা শীত নিয়ে। হামিদুল বলেন, ‘বানে নৌকায়,
মাচায়
উঠে জীবন বাঁচাই। কিন্তু শীতে বৌ-বাচ্চা নিয়া আর এক বিড়ম্বনা। এর ওপর ঠাণ্ডায় কাজ
করতে না পারলে খাওয়ার কষ্ট সহ্য করা লাগে। শীত বেশি হইলে মাঠে কাজ করতে খুব কষ্ট
হয়, হাত-পা হিম হয়া যায়।’
প্রান্তিক মানুষের এমন কষ্টের কথা ভেবে স্থানীয় প্রশাসন শীত নিবারণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও
পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানিয়েছেন, শীত মোকাবিলায়
জেলার ৯ উপজেলা ও তিন পৌরসভায় ৩৫ হাজার ৭০০ পিছ কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও
শীতার্তদের পোশাক ক্রয়ের জন্য উপজেলার চাহিদা ভেদে ৮ থেকে ১৪ লাখ টাকা করে বরাদ্দ
দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক
মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, শীতে জেলার মানুষ যেন কষ্ট না পান সে
জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর
কার্যালয়সহ বিভিন্ন এনজিও থেকেও কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলাগুলোতে সেগুলো
বণ্টন করা হয়েছে। আশা করছি শীতে মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।
এস/এম. জামান