প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২১, ০৫:৩৫ পিএম
আজ ১১ ডিসেম্বর। রংপুরের
পীরগাছা উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পীরগাছা পাকিস্তানি
হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়। এই দিন ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের পতাকা
উত্তোলনের মাধ্যমে পীরগাছা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
মুক্তিযোদ্ধারা পীরগাছা থানাকে শক্রমুক্ত করার জন্য ৬ ডিসেম্বর চারপাশে অবস্থান নেন। ওই দিন বিকেলে মুক্তিযোদ্ধারা চৌধুরাণী হাইস্কুল মাঠে অবস্থান নিলে হানাদার বাহিনী সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করে। ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়া হয় চৌধুরাণী রেলস্টেশন এবং অগ্নিসংযোগ করা হয় আশপাশের বাড়িঘরে।
পাকিস্তানি বাহিনী পরে পিছু হটে রংপুরের দিকে যাওয়ার পথে পীরগাছার লোহার ব্রিজসংলগ্ন ঘাঘট নদীর তীরে অবস্থানরত অপর আরেকটি মুক্তিযোদ্ধা দল তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। দুই পক্ষের প্রায় ঘণ্টাব্যাপী যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটে পালিয়ে যায়। এ সময় আবদুল মজিদ নামের এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এবং পাকিস্তানি বাহিনীর অনেক সদস্য হতাহত হন। এভাবে এগিয়ে যেতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধারা।
অবশেষে ১১ ডিসেম্বর ভোরে পীরগাছা থানা ঘেরাও করেন মুক্তিযোদ্ধারা। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজাকার ও আলবদরসহ ১৭ জন আত্মসমর্পণ করেন। তাদের থানার প্রবেশ পথের পাশে গুলি করে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়া হয়। এভাবে পীরগাছা উপজেলা শক্রমুক্ত করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে ভবেশ চন্দ্র বর্মণ, আবু বক্কর সিদ্দিক, ওমর আলী সরকার, আবদুল মজিদ, মোসলেম উদ্দিন ও নজির হোসেনসহ আরও অনেক নাম না জানা মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
পীরগাছা মুক্ত দিবস দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হলেও এখন মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ভিন্ন মত থাকায় বেশ কয়েক বছর থেকে তা আর পালন করা হয় না।
পীরগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ওয়াজেদ আলী সরকার বলেন, ‘পূর্বের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা ১১ ডিসেম্বর পীরগাছা মুক্ত দিবস পালন করে আসলেও পীরগাছা মুক্ত হয় ১৬ ডিসেম্বরে। সে কারণে ১৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকায় মুক্ত দিবস আর পালিত হয় না।’
জেডআই/ডা