টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
রোববার রাত তখন ১০টা। ড্রিল ও ওয়েল্ডিংয়ের বিকট শব্দ। চারপাশে অনেক গন্ধ। তীব্র গরমের পাশাপাশি গন্ধে নাকাল লোকজন। আর এভাবেই টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চলছে অক্সিজেনের লাইন স্থাপনের কাজ।
এ জন্য বের করে দেয়া হয়েছে ১০ দিনের শিশুসহ কয়েকজনকে। আর কয়েকজনকে রাখা হয়েছে ওয়ার্ডে। তীব্র গরম, শব্দ ও গন্ধে বিপাকে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা শিশু ও তাদের অভিভাবকরা।
শিশু ওয়ার্ডের বাইরে স্যালাইন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নয়ন নামের এক ব্যক্তি। তার পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন তার স্ত্রী। তার কোলে রয়েছে ১০ দিনের শিশু সন্তান। তিনি সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, '১০ দিন আগে আমার স্ত্রী শিশু সন্তানের জন্ম দেয়। সেজন্য আমি স্ত্রীকে এই হাসপাতালে ভর্তি করি। যে ওয়ার্ডে তারা ভর্তি রয়েছে সেখানে অক্সিজেনের লাইন লাগানো হচ্ছে। এর জন্য তাদের বাইরে বের করে দেয়া হয়েছে। গরমে তাদের নিয়ে চরম অসুবিধা হচ্ছে।'
নয়নের পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন ফরমান নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি বলেন, 'আমার সন্তানের বয়স ১৫ দিন। আমার স্ত্রী ও সন্তানকেও বের করে দেয়া হয়েছে। তীব্র গরম সহ্য করে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। কখন এই অক্সিজেনের লাইন লাগানো শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছে না।'
রোববার বিকেলে পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়েছে ১২ বছরের এক শিশু। শিশুটির বাবা সোলায়মান জানান, তাকে স্যালাইন দিয়ে ওয়ার্ডেই রাখা হয়েছে। কিন্তু তার পাশেই লাগানো হচ্ছে অক্সিজেনের লাইন। একদিকে ওয়েল্ডিংয়ের তীব্র গন্ধ, অন্যদিকে দেয়ালের ময়লা চোখে যাচ্ছে ওই শিশুর।
শিশু ওয়ার্ডে রোগী রেখে ওয়েল্ডিং করায় সেখানকার বাতাস দূষিত হয়ে শিশুদের শ্বাসকষ্ট হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এইচএম ট্রেডার্সের সুপারভাইজার তুহিন মিয়া বলেন, 'আমি শুধু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথামতো কাজ করছি।'
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম সজিব বলেন, 'এখন শিশু ওয়ার্ডে কাজ করার কথা নয়। এটি আগামীকাল সকালে করার কথা।'
এএএম/এএমকে/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন