প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ০২:৪৯ এএম
নিঃসন্তান-বন্ধ্যা নারীরা সদ্যস্নান শেষে ভেজা কাপড়ে বটগাছের নিচে বসে আঁচল বিছিয়ে সন্তান লাভের জন্য ভিক্ষা চাইছেন। এ সময় যদি গাছের ফল বা পাতা তাদের আঁচলের ওপর পড়ে তাহলে নিঃসন্তান নারী সন্তান লাভ করবেন। এমনই বিশ্বাস নিয়ে অনেক বন্ধ্যা নারী ভিড় জমিয়েছিলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের গোঁসাইজীর আশ্রমে।
রোববার (৫ ডিসেম্বর)সকাল থেকে দুই দিনব্যাপী উপজেলার গোঁসাইজীর আশ্রমে শুরু হয়েছে এই নবান্ন উৎসব।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই বটগাছের নিচে ১২ জন নারী ভক্ত রঙিন শাড়ির আঁচল বিছিয়ে গাছ থেকে পাতা বা ফল পড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। আশ্রমের এক নারী বৈষ্ণব তাদের দেখভাল করছেন। আর তাদের কর্মকাণ্ড দেখছেন অনেক নারী-পুরুষ। তবে এ উৎসব সোমবার বাসী নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
এক নিঃসন্তান নারী বলেন, ‘অনেকের মুখে শুনেছি আঁচল বিছিয়ে মানত করলে সন্তান হয়। তাই এখানে এসেছি।’
আরেক নারী বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছর ধরে আমার সন্তান হয় না। অনেক চিকিৎসা করিয়ে কোনো ফল না পেয়ে শেষে এখানে এসেছি।’
আশ্রম কমিটির সভাপতি শ্রী সঞ্জয় কুমার জানান, রোববার থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসব। এই দুই দিনে নিঃসন্তান নারীরা তাদের মানত করে। পরে আগত ভক্তদের কলাপাতায় করে প্রসাদস্বরূপ খিচুড়ি খাওয়ানো হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এম শাহাবুদ্দিন জানান, এভাবে সন্তান অসম্ভব। এমন প্রার্থনা হচ্ছে কুসংস্কার। বৈজ্ঞানিক বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এর কোনো ভিত্তি নেই। নারী-পুরুষের সম্পর্ক ছাড়া কারও ফুঁ, মন্ত্র, গাছের পাতা ও ফল- এগুলোর দ্বারা সন্তান উৎপাদন হয় না। এজন্য ফকির, সাধু, দরবেশদের পিছে না ঘুরে তাদের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।
জেডআই/এম. জামান