প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২১, ০৪:১৫ পিএম
শেরপুরের
নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকায় বন্যহাতির দল তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে এক কৃষকের বাড়িঘরের
ক্ষতিসাধন হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকার প্রায় পাঁচ একর জমির আমন ধান খেয়ে ও পা দিয়ে
মাড়িয়ে নষ্ট করেছে। বুধবার (১ ডিসেম্বর) ও বৃহস্পতিবার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা
গ্রামে এ তাণ্ডব চালায়।
স্থানীয়রা
জানায়, গত ১৮ নভেম্বর উপজেলার পানিহাটা গ্রামের ফেকামারি এলাকায় আড়াই বছরের একটি বন্যহাতির মৃত্যুর পর থেকে হাতির ওই দলটি তালতলা এলাকার জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। বুধবার রাত ৯টার
দিকে ৪০-৫০টি হাতি পানিহাটা এলাকার বিশপ নগরে এসে হাসমত আলী নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়ে তার বসতঘর ভেঙে দেয়। এ সময় হাসমত আলী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে
গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান।
পরে
সেখান থেকে হাতির দলটি পানিহাটা পাহাড়ের ঢালের ১৫-১৬ জন কৃষকের প্রায় পাঁচ একর জমির
ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে। খবর পেয়ে বন বিভাগের গোপালপুর বন বিট কর্মকর্তা,
এলাকাবাসী ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা মশাল-টর্চলাইট জ্বালিয়ে, পটকা ফুটিয়ে
ও হই-হুল্লোড় করে হাতির দলটিকে জঙ্গলে ফেরাতে চেষ্টা করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে
হাতির দলটি আবার পাশের তালতলা জঙ্গলে চলে যায়।
ওই
এলাকার কৃষক হাসমত আলী বলেন, ‘হাতির চিৎকার শুনেই আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দৌড়ে পালিয়েছি।
আমার থাকার ঘরটি হাতির দল ভেঙে ফেলেছে। পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটিয়েছি।’
অপর
কৃষক আবু হানিফ বলেন, ‘হাতির দল আগুন ও মানুষ দেখেও ভয় পায় না। এখন আর হ হই-হুল্লা
করেও কাজ হয় না। তাই এর জন্য জরুরিভিত্তিতে সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।’
গোপালপুর
বিট কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, ‘বুধবার রাতে প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি হাতি জঙ্গল থেকে
লোকালয়ে নেমে আসে। এরপর থেকে মশালের আলো জ্বালিয়ে গ্রামবাসীদের নিয়ে হাতি তাড়িয়ে দেয়া
হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বন বিভাগের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে।’
এ
ব্যাপারে বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম বলেন, ‘পানিহাটার
তালতলা জঙ্গল থেকে প্রতি রাতেই হাতির দলটি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। আমরা
এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে হাতির তাণ্ডব থেকে জানমাল রক্ষা করতে কাজ করে যাচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত
কৃষকদের নালিতাবাড়ী থানায় জিডি করে বন বিভাগের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এএমকে/ডাকুয়া