প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২১, ০৬:৫০ পিএম
সাজু মিয়া সকালে
তার সাত বছর বয়সী
একমাত্র ছেলে আব্দুল্লাহ আল
আলিফকে স্কুলে
পৌঁছে দিতে মোটরসাইকেলে চড়ে
বাসা থেকে বের হয়েছিলেন।
কথা ছিল- ছেলে স্কুলে
রেখে যাবেন নিজের অফিসে। কিন্তু এ যাওয়াই যে
শেষ যাওয়া তা বুঝতে পারেননি আলিফের মা। স্কুলে যাওয়ার
পথে বাসচাপায় বাবা
ও ছেলে মারা গেল একসঙ্গে।
বৃহস্পতিবার
(২ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে গোদাগাড়ী উপজেলার বাসলিতলা এলাকায় বিআরটিসির একটি বাস চাপা
দেয় তাদেরকে।
সাজু
মিয়া দীপশিখা নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন
সংস্থার কর্মী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নন্দনপুর গ্রামে। চাকরির জন্য সাজু গোদাগাড়ীতে
পরিবার নিয়ে থাকতেন।
এ
ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা
ব্যারিকেড দিয়ে মহাসড়ক অবরোধ
করে রাখেন। এতে দুই পাশে
তীব্র যানজট দেখা দেয়। খবর
পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত
করে।
গোদাগাড়ী
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান
জানান, সকাল ৯টার দিকে
ছেলে আলিফকে স্কুলে দিতে মোটরসাইকেল নিয়ে
বাড়ি থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মহাসড়কে উঠছিলেন সাজু মিয়া। তখন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীগামী বিআরটিসির
একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে
রাস্তার উল্টো দিকে গিয়ে সাজু
মিয়ার মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এরপর
বাসটি রাস্তার পাশে দুটি গাছে
আঘাত করে থেমে যায়।
এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই বাবা-ছেলের মৃত্যু
হয়। বাসটিও দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনার পরপরই বাসের চালক ও হেলপার
পালিয়েছেন। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের
জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে,
নগরীতে নিহত ব্যক্তির নাম
নাজমুল ইসলাম (২৯)। রাজশাহীর
তানোর উপজেলার বিল্লি বাজারে তার বাড়ি। পেশায়
একজন গ্রাম্য চিকিৎসক ছিলেন তিনি।
স্থানীয়রা
জানান, সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল
নিয়ে শহরে আসছিলেন নাজমুল।
এ সময় দ্রুতগতির একটি বাস নাজমুলের
মোটরসাইকেলকে চাপা দিয়ে পালিয়ে
যায়। এতে
ঘটনাস্থলেই নাজমুলের মৃত্যু হয়।
তবে
কোন গাড়ি চাপা দিয়ে গেছে
সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি
বলে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই)
মিজানুর রহমান। তিনি জানান, সকাল
সাড়ে ৮টার দিকে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া
মোটরসাইকেল ও ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকার
খবরে তারা ঘটনাস্থলে যান।
এরপর লাশ উদ্ধার করে
ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো
হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর
করা হবে।
নূর/এম. জামান