• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

মাধবদীতে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসবে মৃত্যু

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২১, ০৩:১০ এএম

মাধবদীতে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসবে মৃত্যু

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদী সদর উপজেলা মাধবদীতে কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বাধ্য করে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসবের পর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নবজাতকের স্বজনদের নিয়ে সালিশ দরবারের মাধ্যমে সমাধান করেন স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা।

ভুক্তভোগী কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের দড়িকান্দী গ্রামের জাহাঙ্গীর এর স্ত্রী কুলসুম জানান, গর্ভে বাচ্চার অবস্থান খুব ভালো ছিল ও বাচ্চা নড়াচড়া স্বাভাবিক ছিল। পরে কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যাওয়ার পর দায়িত্বরত চিকিৎসক স্বাভাবিক প্রসবের জন্য তাকে ওষুধ প্রয়োগ করেন। পরে স্বাভাবিক প্রসব বেদনা না হলে কুলসুম অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে কুলসুমকে জোর করে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসবের জন্য তার পেটে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নবজাতককে বের করেন ফৌজিয়া নামে এক চিকিৎসক। এরপর নবজাতককে সংকটাপন্ন অবস্থায় পার্শবর্তী আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়।

কুলসুমের বাবা ফিরোজ জানান, ডাক্তারের ভুলের কারণে বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে। এতে তাদের পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেপরে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশ বসা হলে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তার সবার কাছে ক্ষমা চাইলে আমরাও ক্ষমা করে দিয়ে চলে আসি। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জানান বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।

কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার ফৌজিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, “প্রায় ছয় বছর ধরে ওই কেন্দ্রে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসব করিয়ে আসছেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় ১৮শ’ থেকে ১৯শ’ বাচ্চা প্রসব করাতে সক্ষম হয়েছেন। এর মাঝে কুলসুমের অভিযোগটি মিথ্যা। তারা মিথ্যা কথা বলেছে তা বিচারেও প্রমাণ হয়েছে।” তিনি আরও জানান, করোনাকালীন সময়ে এখানে নামমাত্র খরচে নারীরা স্বাভাবিক পদ্ধতিতে বাচ্চা প্রসব করিয়েছেন। তার মাঝে জয়দেবের স্ত্রী ও কুলসুমের বিষয়ে হেনস্তা হতে হয়েছে।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে, কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নেই কোনো অভিজ্ঞ জনবল, নেই অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, নেই সুচিকিৎসা কেন্দ্রটি নারী দালালের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। আর যেন কোনো প্রসূতি মা ভুক্তভোগী না হন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে নরসিংদী সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কাঁঠালিয়ায় ফৌজিয়া নামে সিভিল সার্জনের অধীনে কোনো ডাক্তার নেই। তবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।

জেডআই/এম. জামান

আর্কাইভ