প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১, ০৭:৩৭ এএম
বরিশালের একটি নদীতে ৬
সহস্রাধিক বস্তা ইউরিয়া সারসহ একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। সোমবার (২২ নভেম্বর)
বানারীপাড়া উপজেলার খোদাবখসা দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ওই বাল্কহেডের তিন কর্মচারী তীরে ওঠতে সক্ষম হয়। তারা স্থানীয়দের কাছে ওই ঘটনাটি বাল্কহেড মালিককে জানানোর কথা বলে গাঢাকা দেয়। পরে তারা স্থানীয় চৌকিদার ও থানা পুলিশের কাছে ধরা দেয়।
এদিকে রোববার বিকালে বিসিআইসির ইউরিয়া সার বোঝাই বাল্কহেডটি তার নির্ধারিত গন্তব্য উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর না গিয়ে বানারীপাড়া এলাকায় নঙ্গর করে রাখার পর সোমবার সকালে অনেকটা খালি অবস্থায় দেখতে পাওয়া এবং বাল্কহেডটির তলা ফেটে সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যাওয়ার এ ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেছেন।
অপরদিকে বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীতে সরকারি গুদামের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বস্তা ইউরিয়া সারসহ বাল্কহেডডুবির ঘটনা সম্পর্কে কৃষি বিভাগ কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। এবিষয়ে বরিশাল বিসিআইসির পাঁচ জেলার দায়িত্বরত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম খন্দকার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিজান মাহমুদ কিছুই জানেন না বলে জানান। তারা ওই সারের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে পরবর্তীতে জানাতে পারবেন বলেও জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের খোদাবখসা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও গোয়াইবাড়ি ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোবারক আলী শিকদার জানান, রোববার বিকালে খুলনার নওয়াপাড়া দিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বস্তা ইউরিয়া সার নিয়ে আসা একটি বাল্কহেড তার বাড়িসংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে নঙ্গর করে রাখে। পরদিন সোমবার সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাল্কহেডটির তলা ফেটে সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যায়। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেদের চোখের সামনে বাল্কহেডটির পিছনের দিক ডুবতে শুরু করে এবং সামের অংশ উপড়ে জেগে যাওয়ার পাশাপাশি বাল্কহেডটি আস্তে আস্তে সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যায়। এ সময় স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ওই বাল্কহেডের চালক শফিকুল ইসলামসহ তিন কর্মচারী তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় শিক্ষক মোবারক আলী ও চৌকিদার সবুজসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, সরকারি গুদামের ইউরিয়া সার বোঝাই বাল্কহেডটি রোববার বিকেল অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে পার্শ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর না গিয়ে বানারীপাড়া এলাকায় নঙ্গর করে রাখে। পরদিন সকালে তারা ওই বাল্কহেডটি অনেকটা খালি অবস্থায় দেখতে পায় এবং সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে সেটির তলা ফেটে সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যায়। এ ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়দের মনে না রকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা এব্যাপারে প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
এছাড়া পশ্চিম চাখার এলাকার চৌকিদার মো. সবুজ হোসেন জানান, তিনি ওই ঘটনাটি জেনে থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন। খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাল্কহেডের তিন কর্মচারীকে থানায় ডেকে আনেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন কুমার সাহা সোমবার বিকেল পর্যন্ত কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি খবর পেয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে থানার ওসি মো. হেলাল উদ্দিন জানান, সন্ধ্যা নদীতে ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের চালক মো. শফিকুল ইসলামসহ তিন কর্মচারীর দেয়া তথ্যমতে তারা শনিবার যশোরের নওয়াপারা বিসিআইসি সরকারি গুদাম থেকে এমভি আব্দুর রহমান-২ বাল্কহেডে ৬ হাজার ৪০০ বস্তা ইউরিয়া সার নিয়ে উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর গুদামে যাওয়ার কথা। রোববার বিকালে তারা ওই সার নিয়ে শিকারপুরে না গিয়ে বাল্কহেডটি পার্শ্ববর্তী বানারীপাড়া উপজেলা এলাকায় নোঙ্গর করেন। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বরিশাল/প্রতিনিধি/জেডআই