নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
সময়টা ২০০৭ সাল। রুবেলের বয়স তখন মাত্র সাত। ওই সময় নিখোঁজ হয় সে। এ ঘটনায় অপহরণ ও গুম আইনে মামলা করে রুবেলের মা রহিমা খাতুন। এতে আসামি করা হয় দুই মুক্তিযোদ্ধাসহ ১৯ জনকে। এ মামলার জেরে জেল খেটেছেন মামলার ছয় থেকে সাত আসামি। তবে আশ্চর্যের বিষয় সেই শিশু রুবেল ১৪ বছর পর যুবক হয়ে ফিরে এসেছেন। যা নিয়ে এখন এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার আলীর টেক ইউনিয়নের কুঁড়েরপাড় এলাকার। বুধবার (১৯ মে) রাতে গুম হওয়া রুবেল বাড়িতে ফিরে আসেন। বর্তমানে সে ২১ বছরের যুবক।
রুবেল ফিরে এসেছে এমন খবরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার বাড়িতে আসেন মামলার আসামিরা। সেখানে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়।
রুবেল জানান, প্রায় ১৪ বছর আগে মা রহিমা খাতুনের মারধর ও ক্ষুধার যন্ত্রণায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশনে আসেন সে। পরে সেখান থেকে ট্রেনে করে কমলাপুর যায়। দীর্ঘদিন মানুষের কাছে হাত পেতে খেয়ে বেঁচেছিল। পরে এক লোক তাকে রামপুরা একটি হোটেলে নিয়ে কাজ দেয়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন রুবেল। বর্তমানে সে রঙ মিস্ত্রির কাজ করেন। আর থাকেন মগবাজার-মধুবাগ-হাতিরঝিল সংলগ্ন মসজিদের পাশে।
রুবেল বলেন, 'বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ১০ বছর পর আমার সঙ্গে মায়ের যোগাযোগ হয়। পরে আমি কুঁড়েরপাড় আসতে চাইলে মা আমাকে আসতে নিষেধ করে। মা বলেন, এলাকায় গেলে আমাকে মেরে ফেলবে। গত চার বছর ধরে আমি এলাকায় আসতে চাইলেও মা আমাকে আসতে দেয়নি। বুধবার রাতে মাকে না জানিয়ে কুঁড়েরপাড়ের নিজ বাড়িতে আমি ফিরে আসি।'
আসামিরা রুবেলকে নিয়ে থানায় হাজির হওয়ার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন রহিমা খাতুন।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, 'মামলাটি বেশ কয়েক বছরের পুরোনো। পুলিশ ও ডিবি তদন্ত করেছিল। ভিক্টিমকে আমরা আদালতের জিম্মায় দিব। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
এএএম/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন