প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২১, ০৫:১৫ পিএম
নরসিংদীর ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ভোরে ভোটের আগেই রায়পুরায় নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৩টার দিকে রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে নির্বাচনী সহিংসতা এড়াতে বুধবার (১০ নভেম্বর) দুপুর থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের উপজেলা সদরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রাখা হয়। সেখান থেকে গিয়েই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। তবে সংঘর্ষের পর সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ায় সকাল ৮টা থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
নিহতরা হলেন- বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দী গ্রামের আবদুল হেকিমের ছেলে সালাউদ্দিন মিয়া (২০), সুবানপুর গ্রামের হক মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া (১৮) ও বটতলীকান্দি গ্রামের হাজী সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (২২)। এর মধ্যে নিহত সালাউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (টেলিফোন প্রতীক) রাতুল হাসান জাকিরের সমর্থক ও দুলাল নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকে আশরাফুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী টেলিফোন প্রতীকে রাতুল হাসান জাকির ও আনারস প্রতীকে জাহাঙ্গীর সরকার।
নির্বাচনী সহিংসতা এড়াতে বুধবার দুপুর থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত উপজেলার বাঁশগাড়ি, মির্জারচর, পাড়াতলী, নিলক্ষা ও হাইরমারা ইউনিয়নের সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নজরদারিতে রাখেন। এর মধ্যে রাত দেড়টায় ছাড়া পেয়ে রাত সাড়ে ৩টায় বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল হক তার সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল মেম্বার, লতিফ আলী, ডা. হবি, সেলিম মেম্বারের নেতৃত্বে দলবল নিয়ে বাঁশগাড়ি হিন্দুপাড়া হাসপাতালের কাছে ব্রিজের কাছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান আলী সারজার ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাতুল হাসান জাকিরের সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। সেখানে থেকে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে ও গুলি চালানো হয়। এ সময় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাতুল হাসান জাকিরের সমর্থক সালাউদ্দিন, জাহাঙ্গীর ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক দুলাল মিয়া মারা যান। খবর পেয়ে ভোরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান আলী সারজা বলেন, আমার ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাতুল হাসান জাকিরকে হত্যার উদ্দেশ্যে মূলত আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত আমার ছেলে বাড়িতে ছিল না। আমার স্ত্রী আহত হয়েছেন। শুধু আমার বাড়ি নয়- আমাদের সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমাদের সমর্থক সালাউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর নামের দুজন মারা গেছেন। আর আমার বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে নৌকার সমর্থক দুলাল নামের একজনের মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। তবে তাকে কারা মেরেছে তা আমি বলতে পারব না।
ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু দাবি করে তিনি আরও বলেন, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। যেন আর কোনো সহিংসতা না হয়। আজকে ভোট সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, আমরা অনেক জায়গা ঘুরে দুলাল নামের একজনের লাশ উদ্ধার করেছি। বাকিদের লাশ আমরা পাইনি।
নূর/ডাকুয়া