প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২১, ০৮:৫৬ পিএম
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে টানা দুই দিন আন্দোলনের পর সোমবার (৮ নভেম্বর) স্বাভাবিক হয়েছে লঞ্চ চলাচল। কিন্তু অস্বাভাবিক
হারে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চে যাত্রা করা সম্ভব নয় বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
জানিয়েছেন যাত্রীরা। এ ছাড়া নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে যাত্রী
ও লঞ্চ শ্রমিকদের মধ্যে চলছে বাগ্বিতণ্ডা। ফলে যাত্রীর চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গেই কমতে থাকে যাত্রীর সংখ্যা। নদীবন্দর থেকে ফিরে যেতেও দেখা গেছে অনেককে।
সোমবার বেলা সাড়ে
১১টায় বরিশাল নদীবন্দরে অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চঘাটে এমন চিত্র দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল-ভোলা রুটের যাত্রী এনজিও কর্মী রকিবুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে প্রতিটি গণপরিবহনে
বেশি ভাড়া নিয়ে ভোগান্তিতে আছি। আমি নিয়মিত ভোলা যাতায়াত করি। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে
৩০ টাকা বেশি দিতে সমস্যা নেই, কিন্তু ঢাকা যেতে এখন অনেকটা হিমশিম খেতে হবে। আমাদের
তো বেতন বাড়েনি। এ রকম ভাড়া হলে লঞ্চে কে উঠবে?
হুমায়রা ইয়াসমিন নামে এক
কলেজ ছাত্রী বলেন, বিএম কলেজ থেকে লেখাপড়া করছি। প্রাইভেট পড়িয়ে বরিশালে নিজে পড়াশোনা
করি। প্রতি মাসে বাড়ি যাই। দেখছি হিসাব ছাড়া ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আগে ভাড়ার
থেকে বর্তমান ভাড়া যেটা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটার ব্যবধান অনেক। সরকার হিসাব-নিকাশ
ছাড়া ভাড়া বৃদ্ধির দাবি মেনে নিয়েছে, যেটা খুবই কষ্টদায়ক।
এ বিষয়ে বরিশাল পাতারহাট ইলিশা
রুটের লঞ্চ এমভি রাজপাখির স্টাফ বশির খান বলেন, আন্দোলনের ফলে ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে।
সকাল থেকেই যাত্রী কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লঞ্চে কোনো যাত্রী যাবে কি না সন্দেহ আছে।
ভোলা-বরিশাল রুটের এমভি
আওলাদ লঞ্চের মাস্টার আব্দুর রহমান বলেন, এই রুটে ভিআইপি ভাড়া ছিল ৯০ টাকা, এখন
হয়েছে ১২০ টাকা এবং ডেকে ছিল ৭০ টাকা, এখন হয়েছে ৯০ টাকা। ভাড়া বাড়ায় যাত্রীদের
সঙ্গে সুপারভাইজারের কথাকাটাকাটি হচ্ছে। সকালে ভোলা থেকে বরিশালে আসার সময় যাত্রী
সংখ্যা ভালোই ছিল, কিন্তু বরিশাল থেকে যাত্রী পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ
নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ঢাকা-বরিশাল
রুটে লঞ্চ চালাতে প্রতিদিন আমাদের ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার তেল দরকার হয়। ডিজেলের
দাম বৃদ্ধিতে যাত্রী ভাড়া না বাড়ালে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ টাকা লোকসান হতো,
সে কারণে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। ঢাকা-বরিশাল রুটের
লঞ্চে ডেকে পূর্বে ভাড়া ছিল ২৫৫ টাকা, বর্তমানে হয়েছে ৩৫০, সিঙ্গেল কেবিনে
ছিল ১ হাজার টাকা, যা হয়েছে ১৪০০ টাকা। ডাবল কেবিনের ভাড়া ছিল ২০০০ টাকা, যা
হয়েছে ২৮০০ টাকা। সাড়ে ৩৫ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির হিসাব অনুযায়ী ভিআইপি ও সেমি ভিআইপি
কেবিনের ভাড়াও বৃদ্ধি হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় আজ (সোমবার) সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।
এস/এএমকে/এম. জামান