প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ১২:৫৪ এএম
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশিষ্ট সম্পাদক এবং প্রবীণ সাংবাদিক নুরুল কবির হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রেস উইং গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে এ তথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার কোনো সাংবাদিকের প্রতি হয়রানির ঘটনা সহ্য করবে না। নুরুল কবির দেশের একজন সম্মানিত সম্পাদক এবং সাংবাদিকতার ন্যায়পরায়ণতার জন্য সুপরিচিত। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি যুক্তি ও সততার প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নুরুল কবির দেশের গণমাধ্যম জগতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং ন্যায়পরায়ণ সাংবাদিকতার জন্য লড়াই করে আসছেন।
ইংরেজি দৈনিক নিউজ এজের সম্পাদক নূরুল কবির ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হন। শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিশিষ্ট সাংবাদিক নূরুল কবির ফেসবুকে লিখেছেন, চলতি সপ্তাহে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে হয়রানি করে। ফেরার পথেও একই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হন তিনি।
নূরুল কবির লিখেছেন, ‘দুই দশকের বেশি সময় ধরে যতবার বিদেশে গিয়েছি, প্রতিবারই ঢাকার বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আমাকে হয়রানি করেছে। নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। কখনো গোয়েন্দা কর্মকর্তারা পাসপোর্ট নিয়ে গেছেন, নথিপত্রে সব তথ্য থাকার পরও কেন বিদেশে যাচ্ছি, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষায় রাখা হয়েছে, আমার পাসপোর্টের পৃষ্ঠার ছবি তোলা হয়েছে, যা আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। অনেক সময় নথিপত্র নিয়ে ফ্লাইট ছাড়ার কয়েক মিনিট আগে তা ফেরত দেয়া হয়েছে। তবে কখনোই দেশে ফেরার সময়ে এসব ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়নি।’
সাম্প্রতিক হয়রানির শিকারের বিষয়টি উল্লেখ করে নিউ এজ সম্পাদক লিখেছেন,
একটি মিডিয়া কনফারেন্সে যোগ দিতে ১৮ নভেম্বর বিদেশে যাচ্ছিলাম। আশ করেছিলাম, বিমানবন্দরে আমাকে হয়রানির দিন শেষ হয়ে গেছে অন্তত কিছু সময়ের জন্য। কিন্তু আমি ভুল ভেবেছিলাম। বরং এবার আমাকে দ্বিগুণ হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। যাওয়ার দিন এক ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়। ২২ নভেম্বর ফেরার সময় আবারও এক ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়। দেশপ্রেমিক হওয়াটা দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহে থাকার বিষয়। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারে যারা তাদের তত্ত্বাবধান করেন, তাদের দেশপ্রেম নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হচ্ছি।
প্রসঙ্গত, সাংবাদিক নূরুল কবির কলম্বোতে অনুষ্ঠিত এশিয়া মিডিয়া ফোরাম অংশ নিতে ১৮ নভেম্বর শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলেন। ২২ নভেম্বর দেশে ফেরেন তিনি।