
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২১, ০৪:১৫ পিএম
মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুরে আরও একটি রেলওয়ে কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যেখানে শুধুমাত্র মেরামত নয়, তৈরি হবে রেলকোচ ও যন্ত্রাংশ।
এর মধ্য দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রেলকোচ রফতানির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরে এর প্রাথমিক সমীক্ষাও শুরু হয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৮৭০ সালে তৎকালীন আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের বড় কারখানা সৈয়দপুরে গড়ে উঠে। শুরুতে ওই কারখানায় স্টিম লোকোমোটিভ (কয়লা ইঞ্জিন) মেরামত কাজ হতো। পরে বিদেশ থেকে আমদানি করা কোচের নিয়মিত মেরামত শুরু হয় রেলওয়ে কারখানায়।
একই সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালে ওই কারখানায় ক্যারেজ কনস্ট্রাকশন শপ (সিসি শপ) অর্থাৎ নতুন কোচ নির্মাণের উপকারখানা গড়ে ওঠে। ১৯৯২ সালে তৎকালীন সরকার রেল সংকোচন নীতির আওতায় সিসি শপ বন্ধ করে দেয়। তখন থেকে কারখানাটিতে ব্রড গেজ (বড়) মিটার গেজ (ছোট) কোচ ও ওয়াগন (মালবাহী গাড়ি) ভারী মেরামতের কাজ হয়ে আসছে। এ ছাড়া কারখানাটির ২৯টি শপে ১ হাজার ২০০ ধরনের বিভিন্ন রেলের যন্ত্রাংশ তৈরি হয়ে থাকে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মো. জয়দুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে রেলওয়ে কারখানার ভেতরে দার্জিলিং গেট-সংলগ্ন ২০ একর জমিতে সম্পূর্ণ নতুন কোচ নির্মাণ কারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভারতীয় ঋণে (এলওসি) স্থাপিত হবে কারখানাটি।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশলী মুহাম্মদ কুদরত-ই খুদা জানান, সৈয়দপুরে নতুন কারখানা তৈরির বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের জন্য পরার্মশক নিয়োগের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু করেছি আমরা। নকশাটি অনুমোদন পেলে সে অনুযায়ী মূল প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি, রোলিং স্টক) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী জানান, চলতি অর্থবছরে নতুন কারখানা সম্পর্কিত প্রাথমিক সমীক্ষা শুরু হয়েছে। শিগগিরই এর ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) শুরু হবে। এরপর রেল কর্তৃপক্ষ বিদেশি কনসালটেন্ট (পরামর্শক) নিয়োগ দেবে। তাড়াতাড়ি এসব কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি বলেন, এটি হবে দেশের একটি মেগা প্রকল্প। সৈয়দপুরে নতুন কারখানায় উৎপাদিত রেলকোচ ও যন্ত্রাংশ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশও রফতানি করা হবে।
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশ রেলওয়েকে আত্মনির্ভরশীল করতে সরকার সৈয়দপুরে নতুন একটি রেলওয়ে কারখানা স্থাপনে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। শিগগিরই সেই কাজ শুরু হবে।
টিআর/এএমকে