প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২১, ০৩:২৫ এএম
সারা দেশের নদ-নদীতে ইলিশ মাছসহ অনান্য
মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা
করেছে সরকার। এই নিষেধাজ্ঞায় কুড়িগ্রাম
জেলার পাঁচটি উপজেলা (নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, রাজিবপুর, রৌমারী) ইলিশ জোন হিসেবে
যুক্ত করা হয়েছে। এসব
জেনেও চলছে জেলেদের ইলিশ
মাছ ধরার অবাধ কার্যক্রম।
বিশেষ করে জেলার ব্রহ্মপুত্রের
তীরে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লার হাটে জমে উঠেছে
সকাল-সন্ধ্যা ইলিশের বাজার।
সরেজমিনে
গিয়ে দেখা যায়, প্রবাহমান
ব্রহ্মপুত্রের বুকে ছোট ছোট
ডিঙি নৌকায় করে ইলিশ মাছ
ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছেন
এখানকার জেলেরা। বিকেল থেকে রাত ৯টা
পর্যন্ত নদীর কিনারে বসে
রুপালি ইলিশের বাজার।
আকারে ছোট ও পরিমাণে কম হলেও প্রত্যেক নৌকাতেই রয়েছে রুপালি ইলিশ। নৌকা ঘাটে ভিড়তেই সাধারণ ক্রেতাদের এড়িয়ে মৌসুমি ব্যাপারীরা কিনে সেগুলো নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে স্থানীয়দের। নিম্ন আয়ের মানুষেরা কিনছেন ছোটগুলো। অপর্যাপ্ত অভিযান আর নজরদারির অভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ব্রহ্মপুত্রে মা ইলিশ শিকার চলছে বলে জানান স্থানীয়রা।
জেলেরা
জানান, ‘সারা দিন জাল
টেনে ৫-৭ কেজি
ইলিশ মেলে। কোনো দিন এর চেয়ে কম
মেলে। তবে বেশিরভাগই ইলিশের
আকারে বেশ ছোট। ব্যাপারীরা
এসব মাছ চার থেকে
পাঁচশ’
টাকা কেজি দরে কিনে
নেন। তবে রাতে তুলনামূলকভাবে
ইলিশের বিচরণ কিছুটা বেশি থাকে।’
স্থানীয়
মহুবর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন তিন থেকে চার
মণ এমনকি তারও বেশি ইলিশ
বিক্রি হয় মোল্লারহাটে। তবে
মৌসুমি ব্যাপারীদের দাপটে স্থানীয় স্বল্প আয়ের মানুষের চুলায়
এসব ইলিশ ওঠে না।
সামর্থবানরাই বেশি দামে কিনে
নেন। শহর থেকে আসা
লোকজনরাই এই মা ইলিশগুলো
বেশি দামে কিনছেন।’
উলিপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তারিফুর রহমান সরকার বলেন, ‘সোমবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর আমরা ওই বাজারে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ কেজি ইলিশ জব্দ করেছি। অনেক বড় নদী হওয়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’
জেলা
মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) কালিপদ রায় বলেন, ‘মোল্লার হাটে
এভাবে ইলিশ বিক্রি হচ্ছে
সেটা আমার জানা ছিল
না। এ ব্যাপারে আমি
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
তিনি
আরও জানান, ‘পর্যাপ্ত বরাদ্দ, নৌযান আর জনবল সংকটে
অভিযান পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে। নিজস্ব নৌযান ও লজিস্টিক সাপোর্টের
সংকটে পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে
না। অভিযানের নৌকা দেখলই জেলেরা
নৌকাগুলো নিয়ে দ্রুত পালিয়ে
যায়। দক্ষিণাঞ্চলের মতো দ্রুতগতির নৌযান
পেলে অভিযান পরিচালনায় আরও বেশি সফলতা
পাওয়া যেত।’
নূর/এম. জামান