প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২১, ০৯:৪৭ পিএম
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কুরআন শরিফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় মুসল্লিরা। এর কিছুক্ষণ পর বাজারের কয়েকটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। একই সময় হামলাকারীরা বাজারের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় জয়তুন কুমার সাহা (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে স্থানীয় রাবেয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জয়তুন সাহা কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার মুরাদনগর গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন কুমার সাহার ছেলে। তিনি পূজা উপলক্ষে চৌমুহনী এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় চৌমুহনী কলেজ রোড, বস্তাগলি, ব্যাংক রোড’সহ বাজারের বিভিন্ন স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর আড়াইটায় হঠাৎ করে কয়েকশ লোক চৌমুহনী বাজারের কলেজ রোড ও ব্যাংক রোডে অবস্থিত বিজয়া সার্বজনীন, ইসকন মন্দির, খোত বাড়ি মন্দির, লোকনাথ মন্দির, দশবূজা মন্দিরসহ কয়েকটি মন্দিরে দফায় দফায় হামলা চালায়। এসময় তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে হামলার শিকার হন বেগমগঞ্জ থানার ওসি কামরুজ্জামান সিকদার, এসআই রুবেল মিয়াসহ অন্তত ৭-৮ জন পুলিশ সদস্য। হামলাকারীরা মন্দিরগুলোতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, দু’টি গাড়িতে আগুন ও দোকান-পাটে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও শর্টগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মো. আব্দুল আজিম জানান, মৃত অবস্থায় জয়তুন সাহা নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার পায়ে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, হামলার ঘটনায় কেউ মারা গেছেন বলে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে একজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চৌমুহনী পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
টিআর/ডাকুয়া